ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে গৃহবধু হত্যা মামলার ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও কোন আসামী গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আগামী ২৪ ঘন্টার আসামী গ্রেফতার না হলে থানা ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছে গৃহবধুর পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চৌরাস্তায় গৃহবধু খায়রুন নাহারের (৩০) হত্যার আসামীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। মানববন্ধনে গৃহবধূর মা, বাবা, আত্মীয়-স্বজন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে নিহত খায়রুন নাহারের মা আলেয়া বেগম ও বাবা সাদেকুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, `মোর বেটি কুনো দোষ করিলে মোর বাড়ীত পাঠায় দিবা পারিলেহেন। এংকরে ছুয়াডাক মারে ফিলাবা হবে। আদরের ছুয়াডাক মোর মারে বাঁশঝাড়ত হা-পাও বান্ধিয়া ফেলে রাখিজে। আইজতে ৮ দিন হইল। মামলা করিজু থানাত, কুনো আসামী ধরেনি পুলিশ। কেনে আসামী ধরিল নি পুলিশ? মোর বেটির হত্যার বিচার কি পামনি! কেনে মোক সবাকে লে রাস্তাত দাড়াবা হইল।
গৃহবধুর প্রতিবেশী ব্যবসায়ী শাহিন বলেন, "এমন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ঠাকুরগাঁওয়ের জন্য লজ্জার। এখন প্রযুক্তির যুগে ৮ দিনেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেফতার না হলে থানা ঘেরাওসহ, ইউএন অফিস ঘেরাও ও জেলা প্রশাসক বরাবরের স্মারকলিপিসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।"
স্থানীয় সাংবাদিক হারুন অর রশিদ ও আল মামুন জীবন বলেন, বালিয়াডাঙ্গীতে দিন দিন হত্যা, নির্যাতন বেড়েই চলেছে। আজ খায়রুন নাহার, কাল হয়তো আমাদের মা-বোনেরা এমন ঘটনার শিকার হতে পারে। আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে জনস্মমুখে জানানোর দাবি জানান তারা। একই সাথে নিরীহ ব্যক্তিদের যেন পুলিশ হয়রানী না করে, সেদিকেও বার্তাও দেওয়া হয় মানববন্ধন কর্মসূচী থেকে।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল (সোমবার) সকালে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের সনগাঁও গ্রামে বাঁশঝাড় থেকে খায়রুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ৩০০ গজ দুরে তার জুতা উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ওইদিনই গৃহবধুর বাবা সাদেকুল ইসলাম বাদী হয়ে গৃহবধুর স্বামী তাজমুল ইসলাম, শ্বাশুড়ীসহ ৮ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি শওকত আলী সরকার জানান, পুলিশ মামলার তদন্ত করছে। একই সাথে আসামী ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
একুশে সংবাদ//ঠা.প্র//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :