বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা ষষ্ঠ দফার টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানীতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ১৪৮টি টহল দলসহ সারাদেশে ৪৩২টি টইল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) সকালে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান।
তিনি বলেন, যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা প্রদানে দেশের বিভিন্ন স্থানে দূরপাল্লার গণপরিবহন ও পণ্যবাহী পরিবহনকে র্যাব টহলের মাধ্যমে এস্কর্ট প্রদান করে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
এছাড়া যেকোনো ধরণের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন সহ গুরুত্বপূর্ন স্থানসমূহে গোয়েন্দারা ছদ্মবেশে নজরদারি অব্যাহত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে এক দফা দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা ষষ্ঠ দফার টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হয়েছে। বুধবার (২২ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধ চলবে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত।
ষষ্ঠ দফায়, রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথের এই সর্বাত্মক অবরোধ শুরুর আগেই মঙ্গলবার রাতে রাজধানীসহ দেশের কয়েকটি জায়গায় বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশিদ বিন খালিদ জানান, রাতে যাত্রাবাড়ী মোড়ে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে পোস্তগোলা ফায়ার স্টেশনের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন।
ওদিকে রাত ১১টার পর নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাড়ইপাড়া এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কালিয়াকৈর ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান মোঃ সুজন চ্যানেল 24 কে জানান, রাত ১১ টা ১৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। বাসে আগুন দেয়ার খবর পেয়ে আমাদের ২টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। যাত্রীবাহী বাসটির নাম সাভার পরিবহন।
অবরোধের সমর্থনে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সাভার, পটুয়াখালী, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মশাল মিছিল করেছে বিএনপি ও দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে হামলা, হত্যা, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ২৯ অক্টোবর হরতাল এবং ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি-জামায়াত ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরা।
তারপর ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় এবং ৮ ও ৯ নভেম্বর তৃতীয় দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করে সরকারবিরোধী দলগুলো। পরে ১১ ও ১২ নভেম্বর চতুর্থ দফা এবং ১৫ ও ১৭ নভেম্বর পঞ্চম দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকা দেয় তারা। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তা প্রত্যাখান করে ১৯ ও ২০ নভেম্বর হরতাল সারাদেশে হরতাল পালন করে সরকারবিরোধী দলগুলো।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :