ডিগ্রি নেই, তবুও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গণস্বাস্থ্য হোমিওর প্রতিষ্ঠাতা ডা. এস এম সারওয়ার, যিনি ৪০টিরও বেশি রোগের চিকিৎসক বলে পরিচিত। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা মাত্র এসএসসি পাস। তিনি রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র পুরানা পল্টনের ৫৬/১, বায়তুল ভিউ টাওয়ারের ১২ তলায় “গণস্বাস্থ্য হোমিও” নামে চেম্বার খুলে ক্যান্সারসহ নানা রোগের চিকিৎসা করে আসছেন। শুধু ঢাকাতেই নয়, হবিগঞ্জ জেলার সদর থানার পিটি আই রোডের বাসা নং ৩৫৯৫-এও তার চেম্বার রয়েছে।
জানা যায়, ডা. এস এম সারওয়ার শুধুমাত্র এসএসসি পাস করার পর ঢাকায় এসে একটি হোমিওপ্যাথিক কলেজে ভর্তি হয়ে কিছুদিন ক্লাস করেন এবং সেখানে পরীক্ষা দেন। তিনি হোমিওপ্যাথিক কলেজ থেকে পাস করার পর ঢাকার পুরানা পল্টনের দারুস সালাম মার্কেটের ৭ তলায় একটি কক্ষ নিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। তবে তার আর কোনো উচ্চতর ডিগ্রি বা বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবুও তিনি নিজেকে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছেন।
তার কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করা হয়। সিনিয়র আইনজীবী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান পাখি তার বিরুদ্ধে ৫২ পৃষ্ঠার লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। গত ৩ ডিসেম্বর প্রথমবার নোটিশ দিয়ে ডা. সারওয়ারের বৈধ কাগজপত্র চাওয়া হয়। নোটিশের কোনো জবাব না পাওয়ায়, ২৫ ডিসেম্বর দ্বিতীয়বার নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি কোনো নথিপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন।
সূত্রমতে, ডা. এস এম সারওয়ার অবৈধভাবে দালাল চক্রের সহায়তায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেকে "এশিয়ার বিখ্যাত ক্যান্সার গবেষক" বলে প্রচার করেন। আইনজীবী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান পাখি অভিযোগ করেন, তার বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ দেয়ার কারণে ডা. সারওয়ারের ক্যাডার বাহিনী তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে।
ডা. এস এম সারওয়ারের চিকিৎসার কোনো সুনির্দিষ্ট ফলাফল পাওয়া যায়নি। অভিযোগ রয়েছে, তার দেওয়া ওষুধ সেবন করেও রোগীদের রোগ ভালো হয়নি। বরং সময়ক্ষেপণের ফলে রোগীদের অবস্থা আরও অবনতি হয়।
হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন অঞ্চলে তার দালাল চক্র সাধারণ রোগীদের চেম্বারে নিয়ে আসে। দালালদের মাধ্যমে আনা রোগীদের থেকে তিনি বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোগীরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলেও নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হয়।
ডা. এস এম সারওয়ারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :