AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ডিমের দামে রেকর্ড, কোথায় তদারকি সংস্থা?


Ekushey Sangbad
SA Polash (এসএ পলাশ)
০৫:১৭ পিএম, ৯ আগস্ট, ২০২৩
ডিমের দামে রেকর্ড, কোথায় তদারকি সংস্থা?

সর্বকালের রেকর্ড ছাড়ালো ডিমের দাম। রাজধানীতে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম ব্রিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। ছোট বাজার কিংবা মুদি দোকানে তা বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। আর খুচরা কিনতে গেলে প্রতিটি ডিম কিনতে হচ্ছে এখন ১৪-১৫ টাকায়। যদিও ডিমের দামে ইতিহাস হয়েছে তবুও অদৃশ্য কারণে নিশ্চুপ তদারকি সংস্থা।

 

বারংবার ডিমের এরুপ দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা মানুষ। বাজারে সব ধরনের নিত্য পণ্যে দাম বেড়েছে। নিম্নবিত্ত ছাড়াও মধ্যবিত্তদেরও নাভিশ্বাস বেড়েছে। যারা মাছ-মাংস বাদ দিয়ে ডিম দিয়ে ভাত জোগাড় করত, তাদেরও ব্যয় বেড়েছে। এতে গরিবের জন্য বাজার করা এখন বড় ধরনের মানসিক কষ্টের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

ডিমের এরুপ দাম বৃদ্ধিতে জনসাধারণ আঙ্গুল তুলেছে তদারকি সংস্থা সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দিকে। তাদের ভাষ্য, দাম বৃদ্ধিতে মুনাফার টাকা যদি সংশ্লিষ্টদের পকেটে যায় তবে সাধারণ মানুষের কষ্টে কার কী আসে।

বুধবার (৯ আগস্ট) ডিমের মূল্য সহনীয় করার বিষয়ে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর ডিমের দামে নৈরাজ্য করায় তদারকি করে মূল্য সহনীয় করা হয়েছিল। অসাধুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল। ভোক্তার স্বার্থ বিবেচনায় এবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে এটি দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরও আছে। ডিমের দাম কেন বাড়ছে, উৎপাদন খরচ বেড়েছে কিনা; সেটি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ভালো বলতে পারবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বা প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যদি আমাদের এ বিষয়ে কাজ করতে বলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

 

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত দুদিনের ব্যবধানে প্রতি হালি (চার পিস) ফার্মের ডিমে ৭.১৪ শতংশ দাম বেড়েছে। আর গত বছর একই সময়ের তুলনায় প্রতি হালি ডিম ২৫ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বুধবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৬৫ টাকা। আর পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৭০ টাকা, যা দুই দিন আগে ১৫০ টাকা ছিল। আর গত বছর একই সময় প্রতি ডজন ডিম ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ফলে বছরের ব্যবধানে প্রতি হালি ডিম ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে।

 

রাজধানীর কাওরান বাজারে ডিম কিনতে আসা মো. হায়দার আলী বলেন, ‘ভ্যান চালিয়ে যে টাকা আয় করি, তা দিয়ে ভালো কোনো খাবার জোগাড় করতে পারি না। ডিম দিয়ে বেশিরভাগ সময় পরিবারে ভাত জোগাড় করতে হয়। কিন্তু এই ডিমের দামও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। দেখার যেন কেউ নেই।’

 

ব্যবসায়ী হুমায়ন কবীর বলেন, ‘গত বছরের মতো পাইকারি বাজারে হঠাৎ করে ডিম ও মুরগির দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু পাইকারি বাজারে কোনো ধরনের সংকট নেই। তারা ইচ্ছা করে বেশি মুনাফা করতে বছরের একটা সময় দাম বাড়িয়ে দেয়। এবারও এমনটাই হয়েছে। দেশে একাধিক তদারকি সংস্থা থাকলেও তারা কিছু করতে পারছে না। বরং আমরা বেশি দাম দিয়ে এনে বেশি দামে বিক্রি করলে জরিমানা গুনতে হয়।’

এদিকে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘মুরগি, ডিম ও ফিডের দাম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বেশ কয়েকটি করপোরেট কোম্পানি। প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা মোট চাহিদার ৯০ শতাংশ ডিম ও মুরগি উৎপাদন করে। মাত্র ১০ শতাংশ ডিম ও মুরগি উৎপাদন করলেও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় করপোরেট কোম্পানিগুলো একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সময় অসময়ে ডিম ও মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়ে তারা লাভবান হলেও প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা হুমকির মুখে পড়ছে। ’

 

তিনি বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য পোল্ট্রি স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে ২০১০ সালে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি পোল্ট্রি ফিড, মুরগির বাচ্চা, ডিম ও মুরগির কৌশলপত্র গঠন করলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মোবাইল কোর্ট পরিচালনার অনুমতি থাকলেও সেটি তদারকি করা হয় না। ফলে কোম্পানিগুলো প্রান্তিক খামারিদের কন্ট্রাক্টে নিতে বাধ্য করে। ডিম ও মুরগির উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে পোল্ট্রি ফিড ও বাচ্চার দাম বাড়িয়ে খামারিদের লোকসানের মুখে ফেলে দেয়। এ অবস্থায় সরকার যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে প্রান্তিক পর্যায়ের পোল্ট্রি শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়বে। এতে ডিম ও মুরগির বাজার জনগণের ক্রয়ক্ষমতার আরও বাইরে চলে যাবে।’

 

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ জানান, ‘বর্ষা মৌসুমে সবসময়ই ডিমের চাহিদা বেশি থাকে। সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। মাছের দামও চড়া। এ জন্য ভোক্তারা ডিমের প্রতি ঝুঁকছেন। অন্যদিকে ডিমের দৈনিক যে চাহিদা রয়েছে, সে অনুযায়ী উৎপাদন হচ্ছে না। কারণ খামারিরা ডিম উৎপাদনশীল বয়স্ক মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। তা ছাড়া ডিমের চাহিদা ও উৎপাদনের কোনো সঠিক হিসাব নেই। এ কারণে একটু চাহিদা বাড়লেই বাজারে দ্রুত প্রভাব পড়ে যাচ্ছে। এবারও এমনটাই হয়েছে।’

 

একুশে সংবাদ/এপি

Link copied!