আমদানিকৃত বিভিন্ন ফলের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০০ টাকা। গত বছরের তুলনায় দেশের বাজারে আমদানির সকল ফলের দাম কেজিতে বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। একারণে আগের চেয়ে বিক্রি কমে যাওয়ায় হতাশ বিক্রেতারা।
ঢাকার বাজার ও মার্কেট এমন কি নগরীর বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী ফলের দোকানে মৌসুমি ফল খুব একটা দেখা যায় না। আমদানি করা আপেল, মাল্টা, কমলা, আনার ও আঙ্গুর রয়েছে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায়। এসব ফলের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিতে বেড়ে গেছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।
ফল প্রতি কেজি দাম ২০২২ | প্রতি কেজি দাম ২০২৩ |
আপেল ১৭০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা | ২৬০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা |
কমলা ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা | ২৪০ টাকা থেকে ২৬০ টাকা |
মাল্টা ১৬০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা | ২৬০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা |
আঙ্গুর ৩৫০ টাকা থেকে ৩৬০ টাকা | ৪৪০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা |
ফলের দাম বেশি হওয়ায় ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন এক বিক্রেতারা বলেন, বর্তমানে প্রত্যেক জিনিসের দাম বেশি। পরিবহন খরচ থেকে শুরু করে আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুট ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, দেশের বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ফল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এ প্রসঙ্গে খুচরা বিক্রেতারা জানান, দাম পাইকারি বিক্রেতারা বাড়িয়েছে। অন্যদিকে পাইকারি বিক্রেতারা জানান, অতিরিক্ত শুল্ক ও এলসি (ঋণপত্র) জটিলতায় আগের চেয়ে ফল আমদানি কমেছে। আর এর প্রভাব পড়েছে বাজারে।
ফলের চড়া দামের বিষয়ে এক বিক্রেতা বলেন, গত বছর এই মৌসুমে যে ফলের দাম ছিল ১৭০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা, সেই একই ফলের দাম চলতি বছরের একই সময়ে গিয়ে ঠেকেছে ২৭০ টাকা থেকে ২৮০ টাকায়।
বাজার পরিস্থিতি তুলে ধরে আরেক বিক্রেতা বলেন, বাজারে ক্রেতা নেই। বেচাকেনা খুবই কম। কারণ ফলের দাম বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। মূলত ডলার সংকটের কারণেই দাম বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, বাংলাদেশে ‘ফ্রেশ ফ্রুটস’ ও ‘ড্রাই ফ্রুটস’ এই দুই ক্যাটাগরিতে প্রায় ৫২টির মতো ফল আমদানি করা হয়। শুল্ক না কমলে এসব ফলের দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানান বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুট ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ফল আমদানির ওপর অতিরিক্ত ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। এতে আমরা ফল আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছি। সেক্ষেত্রে যদি কাস্টম ট্যাক্স কমানো হয়, তাহলেই সাধারণ মানুষ বাজার থেকে ফল কিনতে পারবেন। আর সেটি না হলে, ফলের দাম নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালে আসবে না।
গতবছর দেশে ডলার-সংকট দেখা দেয়ায় ফল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে বিদেশি ফলে সব ধরনের শুল্ক বাড়িয়ে দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগে যেখানে বিদেশি ফলের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কহার ছিল ৩ শতাংশ, তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ শতাংশে। এছাড়া এসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খুলতে চায় না ব্যাংকগুলো। সেই সঙ্গে আছে অন্যান্য ভ্যাট ও ট্যাক্স।
প্রসঙ্গত, ভারত, চীন, থাইল্যান্ড, ভুটান, মিসর, ব্রাজিল, তিউনিসিয়া, আর্জেন্টিনা, তুরস্ক, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ফ্রান্স থেকে সবচেয়ে বেশি ফল আমদানি করা হয় বাংলাদেশে।
একুশে সংবাদ/এএইচবি/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :