এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে আরও বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট (সেক্টর ও থিমস) ফাতিমা ইয়াসমিনের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে এই বাজেট সহায়তা চান অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর দফতরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার এডিবি’র কাছে আরও বাজেট সহায়তা চাওয়ার বিষয়টি জানান। আর এডিবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।’
বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বৈঠক শেষে বলেন, “এডিবি’র সঙ্গে সম্পর্ক ডেভলপ করছে ৫০ বছর ধরে। এটা আরও ভালো হবে, আরও শক্তিশালী হবে। তার জন্যই আমরা সন্তুষ্ট। আমরা এডিবি’র বার্ষিক সম্মেলনে যাচ্ছি। সেখানে আরও আলোচনা হবে। কিন্তু সো ফার আমরা খুবই হ্যাপি। তারা আমাদের প্রয়োজন বুঝতে পারছে, আমরা খুবই সন্তুষ্ট।’
এ সময় অর্থসচিব বলেন, ‘এডিবি আমাদের ৫০ বছরের বন্ধু। আমরা এডিবি’র কাছ থেকে ফান্ড পেয়ে আসছি, ভবিষ্যতে যেন আরও পাই, সে জন্য স্যার (অর্থমন্ত্রী) অনুরোধ করেছেন। বিশেষ করে বাজেট সাপোর্ট আমাদের নতুন উইন্ডো, বাজেট সাপোর্টে এডিবি আমাদের অনেক হেল্প করেছে। করোনার সময় আমাদের বাজেট সাপোর্টে দেওয়ায় আমরা ইকোনমির দ্রুত রিকোভারি করতে পারছি। এই বাজেট সাপোর্ট যাতে আরও বাড়ে সে জন্য স্যার রিকোয়েস্ট করেছেন।’
আরও বাজেট সাপোর্টে চাওয়ার প্রেক্ষিতে এডিবি’র পক্ষ থেকে কি বলা হয়েছে সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করলে ফাতেমা ইয়াসমিন বলেন, ‘আলোচনা করছি আমরা।’
এরপর অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেট সাপোর্টও দেবে। ওরা আসছেই তো এ জন্য।’
আমাদের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এডিবি প্রতিনিধি দলের কোনো অবজারভেশন আছে কি, এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘না কোনো অবজারভেশন নেই। ওরা খুব খুশি।’
এদিকে চলতি বছরের জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে ৪০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় চার হাজার কোটি টাকার বেশি) বাজেট সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এডিবি। গত বছরের ১১ ডিসেম্বরে এ বিষয়ে চুক্তি সই হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে থেকেও ৯ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।
ইআরডির তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি আট মাসে সুদ ও আসল বাবদ আন্তর্জাতিক ঋণ দাতাদের প্রায় ২০৩ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে সরকার। গত অর্থবছরের একই সময়ে পরিশোধ করেছিল ১৪২ কোটি ডলার। অর্থাৎ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে ৪৩ শতাংশ। এরমধ্যে সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৮০ কোটি ৬০ লাখ ডলার (৮০৬ মিলিয়ন), যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ।
সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোয় সরকারের বাজেট সহায়তা নেওয়ার পরিমাণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। মূলত কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে টিকা কেনা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য বাজেট সহায়তার পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া ইউক্রেন- রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকার বাজেট সহায়তা নেওয়ার কার্যক্রম জোরদার করে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার ১৭৬ কোটি ডলার, ২০২২১-২২ অর্থবছরে ২৫৯ কোটি এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০৯ কোটি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা নেয় সরকার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজেট সহায়তার পরিমাণ ছিল প্রায় ২৫ কোটি ডলার।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :