পদ্মা সেতু ও পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলে প্রথমবারের মতো গড়ে তোলা হচ্ছে রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড)। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে। এ ইপিজেডে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেড় হাজার মিলিয়ন বা দেড়শ’ কোটি ডলার বৈদেশিক বিনিয়োগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণাঞ্চলের বরিশালে এই প্রথম নির্মাণ করা হচ্ছে ইপিজেড। ৪১০ একর জমির ওপর গড়ে উঠবে ৩০৬টি শিল্প প্লট। পদ্মা সেতু এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরকে কেন্দ্র করে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ এ ইপিজেড প্রকল্প হাতে নেয় সরকার।
শেষ হয়েছে প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ। এরই মধ্যে পুরো জমি বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) কাছে হস্তান্তরও করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে নির্মাণ কাজ।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ওবায়দুর রহমান জানান, অধিগ্রহণ করা জমি বেপজার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিগগিরই নির্মাণ কাজ শুরু হবে। নির্মাণ শেষ হলে কর্মসংস্থানে আশেপাশের মানুষকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
পটুয়াখালী ইপিজেডের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ইপিজেড পূর্ণাঙ্গ চালু হলে এখানে প্রায় এক হাজার ৫৩০ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং প্রতি বছর এক হাজার ৮৬০ মিলিয়ন ডলার আয় হবে। আর সরাসরি কর্মসংস্থান তৈরি হবে এক লাখ মানুষের। এছাড়াও দুই লাখ মানুষের পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে।
তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী জানান, এখানে পণ্য উৎপাদনের পর পায়রা বন্দর ব্যবহার করে দ্রুত রফতানি করার সুযোগ থাকায় পটুয়াখালী ইপিজেডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি। আর ইপিজেডকে কেন্দ্র করে আমদানি-রফতানি বাড়বে পায়রা সমুদ্র বন্দরে।
এদিকে, ইপিজেড নির্মাণে স্থানীয়রা খুশি হলেও জমি অধিগ্রহণে মৌজা দর কম নির্ধারণ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জমি মালিকরা। তারা বলছেন, জমির বর্তমান দামের চেয়ে অনেক কম দেয়া হচ্ছে।
যেখানে নির্মাণ হচ্ছে ইপিজেড
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নে হচ্ছে এ ইপিজেড। এছাড়াও একই প্রকল্পের আওতায় কুয়াকাটায় ২.২৫ একর জমির ওপর স্থাপিত হচ্ছে ইনভেস্টরস ক্লাব।
প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান
সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে গৃহীত এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বেপজা। এর খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে বেপজার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৩৩৮ কোটি টাকা এবং বাকি ১ হাজার ১০৫ কোটি টাকার যোগান দেয়া হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে।
প্রকল্পের আওতায় যা যা নির্মাণ হবে
প্রকল্পের আওতায় রাস্তা, ড্রেন, ৪টি ৬তলা কারখানা ভবন, ৩টি ১০তলা আবাসিক ভবন, একটি ৬তলা ও ২টি তলা অফিস ভবন এবং ২টি অন্যান্য ভবন নির্মাণ করা হবে।
এছাড়াও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ১৪টি সাবস্টেশন, ১৫ কিলোমিটার ১১ কেভি এইচটি লাইন ও একটি ৩৩/১১ কেভি জিআইএস সাবস্টেশন নির্মাণ ও একটি হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :