বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা রোববার (৫ মে) একযোগে পদত্যাগ করলে একই দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেসরকারি এই ব্যাংকটিতে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয়।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) সঙ্গে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে এই পরিবর্তন আনলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে গত ২৭ এপ্রিল কোনও ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল)। ওইদিন ব্যাংকটির পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ন্যাশনাল ব্যাংককে শক্তিশালী করতে খেলাপি ঋণ আদায়ে কার্যক্রম শুরু করে দেন তারা। ঋণ আদায়ে বিভিন্ন শাখাগুলোকে লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যানসহ পর্ষদের বেশিরভাগ সদস্য পদত্যাগ করেন।
এদিকে পরিচালকরা পদত্যাগ করায় ৫ মে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি খলিলুর রহমানকে প্রধান করে ১০ সদস্যের নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের পর্ষদের পারভিন হক শিকদারসহ অধিকাংশ পরিচালকই বাদ পড়েছেন।
অবশ্য ৫ মাস আগেও এই ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গেলো বছরের ডিসেম্বর মাসে সুশাসনের অভাব ও দুর্বল আর্থিক অবস্থার অভিযোগে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এরপর চলতি বছরের ৯ই এপ্রিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ও ইউসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) বৈঠকে একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত হয়।
রবিবার ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো এক আদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে খলিলুর রহমানকে। তিনি ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন উদ্যোক্তা পরিচালক। পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন। পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লে. জে. মো. সফিকুর রহমান (অব.), প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজুল করিম, এফসিএমএ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এরশাদ মাহমুদ।
এছাড়া ব্যাংকটিতে নতুন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এহসানুল করিম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এ কে এম তফাজ্জল হককে।
ব্যাংকটিতে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিন জন। তারা হলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মো. হেলাল উদ্দীন নিজামী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ড. রত্না দত্ত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জহুরুল হুদা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে আরও শক্তিশালী করতে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিকে চেয়ারম্যান করে পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। যাতে ব্যাংকটিতে সুশাসন নিশ্চিত হয়।
এদিকে সোমবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পর্ষদ। সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলবেন ন্যাশনাল ব্যাংকের নব গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :