AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

পুঁজিবাজারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান বিনিয়োগকারীরা


Ekushey Sangbad
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
০৪:৫৩ পিএম, ২৯ মে, ২০২৪
পুঁজিবাজারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান বিনিয়োগকারীরা

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা প্রতিনিয়ত পুঁজি হারাচ্ছেন এবং অনেকে বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছেন- এমন দাবি করে পুঁজিবাজারের মন্দা পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ।

২৯ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। ‘পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী জাতীয় ঐক্য ফাউন্ডেশন’-এর ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মো. রুহুল আমিন আকন্দ বলেন, পুঁজিবাজারের সঙ্গে প্রায় ৩৫ লাখ বিনিয়োগকারী ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং পরোক্ষভাবে প্রায় তিন কোটি মানুষ তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন।

তিনি বলেন, আগামী বাজেটে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর ওপর ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপ হচ্ছে (তবে, ক্যাপিটাল গেইন ৪০ লাখের কম হলে কর দিতে হবে না), এমন একটি খবর গণমাধ্যমে এসেছে। বাস্তবেই যদি ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের ওপর এ মুহূর্তে গেইন ট্যাক্স আরোপ করা হয়, তবে বাজার দীর্ঘমেয়াদের জন্য আকর্ষণ হারাবে।
‘বর্তমানে অনেক বিনিয়োগকারীর অপ্রদর্শিত অর্থ রয়েছে পুঁজিবাজারে। শুধু তা-ই নয়, পুঁজিবাজার নিচে চলে আসায় অনেক অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে ঢোকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ অবস্থায় যদি ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের ওপর গেইন ট্যাক্স আরোপ করা হয় তবে ওই টাকাগুলো হয়তো আর বাজারে আসবে না। যা পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদে মন্দার সৃষ্টি করবে’- বলেন তিনি।

রুহুল আমিন আরও বলেন, পুঁজিবাজারের প্রতি বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের আস্থা একেবারে শূন্যের কোঠায়। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে হলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে সরকারকে। কলসির নিচে ফুটো থাকলে পানি যতই ঢালা হোক কলসি ভরবে না। কলসির ফুটোর মতো পুঁজিবাজারের টাকা বের হয়ে যাওয়ার ছিদ্রগুলো বন্ধ করতে হবে। তবেই বাজার দীর্ঘমেয়াদে ভালো হবে।

তিনি বলেন, দেশের এমন কোনো শিক্ষিত বেকার নেই, যে এই বাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, এমনকি ঘরের শিক্ষিত গৃহিণীরাও পুঁজিবাজারের সঙ্গে জড়িত। যে বাজারের সঙ্গে এত মানুষের ভাগ্য জড়িত, সেই বাজারকে যে কোনো মূল্যে ইতিবাচক ধারায় রাখতে হবে। দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করতে হবে।

‘দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রাণকেন্দ্র শেয়ারবাজার আজ চরম হুমকিতে। বিনিয়োগকারীরা প্রতিনিয়ত তাদের পুঁজি হারাচ্ছেন। অনেক বিনিয়োগকারী এরই মধ্যে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছেন।’

‘শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বর্তমান পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর তাদের নানা আশ্বাস ও আহ্বানে নতুন করে অনেক বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু অপরিপক্কতা ও দূরদর্শিতার অভাব, কিছু বিতর্কিত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া, বস্তা পঁচা কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়ে বাজার থেকে বেহিসাবি (বিশাল আকারের) অর্থ বের করে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া- ইত্যাদি নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। এ অবস্থায় আমরা বিনিয়োগকারীরা খুব অসহায় অবস্থায় রয়েছি।’
রুহুল আমিন বলেন, বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজার স্মরণকালের সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে। দীর্ঘ ১৫ বছর পুঁজিবাজারে যে অনিয়ম হয়েছে তারই ফলাফল এখন ভোগ করছে দেশের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, নিয়ন্ত্রণ সংস্থার অব্যবস্থাপনা, বন্ধ কোম্পানির ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা, সিন্ডিকেট করে প্লেসমেন্ট বাণিজ্যের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া, বন্ধ কোম্পানির ডিরেক্টররা ভুয়া এবং আকর্ষণীয় মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের শেয়ারগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ধরিয়ে দিয়ে বাজার থেকে টাকা নিয়ে সটকে পড়াসহ নানা অনিয়ম এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গত কয়েক মাসে প্রায় ৭০ হাজার বিও অ্যাকাউন্ট থেকে সব শেয়ার বিক্রি করে বিও অ্যাকাউন্ট খালি করে দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। উপরের কারণগুলো পুঁজিবাজারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। অভ্যন্তরীণ সমস্যার পাশাপাশি বর্তমানে যোগ হয়েছে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক চাপ। গত দুই বছরে দেশে ডলারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশের ওপরে।

রুহুল আমিন বলেন, ব্যাংকগুলোতে বর্তমানে তারল্য সংকট প্রকট। কলমানি রেট কোনোভাবেই কমছে না। হু হু করে বাড়ছে ব্যাংকের ইন্টারেস্ট রেট। মুনাফা বেশি পাওয়া যাচ্ছে ট্রেজারি বিল-বন্ডে। দুই বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডে এখন সর্বোচ্চ সুদ। চার বছর পর সুদহার সীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের ঋণ ও আমানতের সুদহার এখন থেকে নিজেরা ঠিক করবে। দেশের ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা আরও ভয়াবহ।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে- বর্তমানে ১৭টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ৫০ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা মোট ঋণের ৯০ শতাংশই খেলাপি হয়ে গেছে। প্রতিদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক কমছে আর বিনিয়োগকারীদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বাজারের এই ডাউন ট্রেন্ড শুরু হয়েছে ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে, যা বর্তমানে আরও বেশি ত্বরান্বিত হয়েছে।

যেসব দাবি জানিয়েছে বিনিয়োগকারীদের সংগঠনটি
১. আসন্ন বাজেটে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতায় ৫০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের ব্যবস্থা করা।
২. আগামী এক বছর সব ধরনের আইপিও অনুমোদন বন্ধ রাখতে হবে।
৩. টেকনো ড্রাগসের আইপিও বন্ধ করতে হবে।
৪. ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপ বন্ধ করতে হবে।
৫. বাইব্যাক আইন কার্যকর করতে হবে।
৬. শেয়ারের দাম বাড়লে যেমন কারণ দর্শানো হয়, দাম কমলেও কারণ দর্শানোর নোটিশের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনের ইস্যু দেখিয়ে যেসব কোম্পানির শেয়ার দর আকাশচুম্বী করা হয়েছে, সেসব কোম্পানির শেয়ার কারসাজি চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
৮. মিউচ্যুয়াল ফান্ড উন্নয়নে দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আর্থিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও নো ডিভিডেন্ড দেওয়া কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
৯. ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড বাজার উন্নয়নে ব্যবহার করতে হবে।

১০. পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তা ও সুরক্ষা তহবিল গঠন করতে হবে।

১১. স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট পুঁজিবাজার ও স্বচ্ছতা আনতে বিএসইসিতে বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

১২. আসন্ন বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ সম্পূর্ণ নিঃশর্তভাবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

একুশে সংবাদ/জা.নি./ এসএডি
 

Link copied!