সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আসছে আরও ৯ লাখ ৮১ হাজার ৬১ জন। নতুন করে ৫ লাখ প্রতিবন্ধী ভাতা, ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৮০ জনের মাতৃত্বকালীন ভাতা, ২ লাখ বয়স্ক ভাতা, ২ লাখ বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, ৫ হাজার ৭৪৯ তৃতীয় লিঙ্গ ও ৯০ হাজার ৮৩২ জন সমাজের অন্য অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে ভাতার আওতায় আনা হবে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ তথ্য জানান। আগামী অর্থবছরে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন মিলে জাতীয় বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ লাখ ২৬ হাজার ২২৭ কোটি টাকা ছিল। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ৯ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আগামী অর্থবছরে প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্তের সংখ্যা বর্তমান ২৯ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩২ লাখ ৩৪ হাজারে উন্নীত করা হবে। এছাড়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের উপবৃত্তির হার বিদ্যমান ৯৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০ টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রামীণ এলাকায় মাতৃত্বকালীন ভাতা ও শহর এলাকার কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল কর্মসূচিকে ঢেলে সাজিয়ে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল কর্মসূচির আওতায় এমআইএস ভিত্তিক মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এ কর্মসূচির অধীনে মায়েদের ৩৬ মাস পর্যন্ত মাসিক ৮০০ টাকা করে দেওয়া হয়।
‘সারাদেশে মা ও শিশুদের সহায়তা প্রাপ্তি সহজ এবং নিশ্চিত করতে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। এছাড়া এ কার্যক্রমের আওতা আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে আগামী অর্থবছরে উপকারভোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৪ হাজার ৮০০ জন থেকে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ২৮০ জনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সরকার প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৮ লাখ ১ হাজার প্রবীণের জন্য মাসিক ৬০০ টাকা হারে মোট ৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। আগামী অর্থবছরে ভাতাপ্রাপ্ত প্রবীণের সংখ্যা বাড়িয়ে ৬০ লাখ ১ হাজার জনে উন্নীত করা হবে। এ বাবদ ৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এছাড়া ভাতাপ্রাপ্ত বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীর সংখ্যা বিদ্যমান ২৫ লাখ ৭৫ হাজার জন থেকে বাড়িয়ে ২৭ লাখ ৭৫ হাজার জনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এ বাবদ এক হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।’
আবুল হাসান মাহমুদ আলী আরও বলেন, বেদে, তৃতীয় লিঙ্গসহ সমাজের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বর্তমানে মোট ৬ হাজার ৮৮০ জনকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে মোট ১২ হাজার ৬২৯ জনকে ভাতার আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
‘এছাড়া বেদে জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা কার্যক্রম চলমান থাকবে। আগামী অর্থবছরে সমাজের অনগ্রসর অন্য জনগোষ্ঠীর ৯০ হাজার ৮৩২ জনকে ভাতার আওতায় আনা হবে।’ বলেন অর্থমন্ত্রী।
একুশে সংবাদ/জ.ন.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :