- দেশীয় কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা
- অসাধু ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি মানুষ
- বাজারের নিয়ন্ত্রন সিন্ডিকেটের হাতে
ঢাকার বাজারে বেড়েই চলেছে কাঁচামরিচের দাম। দেশীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি। তবে হাইব্রিড মরিচে দাম কিছুটা কম, বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়।
বাজারে সবজির সরবরাহ কম। অথচ ঈদে টানা মাংস খেয়ে হাঁফিয়ে ওঠা মানুষ এ সপ্তাহে সবজি কিনছেন বেশি। ফলে সবজির বাজারও চড়া। প্রায় সব সবজির দামই ৫-১০ টাকা বেড়েছে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮৫-১০০ টাকা কেজি পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহের চেয়ে প্রায় ১০ টাকা বেশি। ঝিঙার কেজি ৭০ টাকা, করলা ৮৫-৯০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫৫-৬০ টাকা, পটলের কেজি ৬০-৬৫ টাকা, কচুরমুখি ১০০-১১০ টাকা, কচুরলতি ৬৫-৭০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, পেঁপে ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে রিমন আহমেদ বলেন, রীতিমতো বিস্মিত হয়ে গেছি কাঁচামরিচের দাম শুনে। ঈদের পর আজই বাজারে এসেছি প্রথম, কাঁচামরিচের দাম যে এতটা বেড়ে গেছে এ নিয়ে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। হঠাৎ করেই ইচ্ছে মতো দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। আমরা ক্রেতারা যেন সবসময়ই বিক্রেতাদের কাছে, অসাধু ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে আছি। তারা যখন যা ইচ্ছা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। দেশের কাঁচামরিচ আমরা কেন এত দাম দিয়ে কিনব? এটা রীতিমতো বিস্ময়কর একটি ব্যাপার। দুই একদিনের ব্যবধানে কাঁচামরিচের কেজি গিয়ে ঠেকবে ৪০০ টাকায়, এটা মেনে নেওয়া যায় না। হঠাৎ করেই এত দাম বেশি, তবুও বাধ্য হয়ে এক পোয়া কাঁচা মরিচ ১০০ টাকায় কিনতে হলো।
হঠাৎ কেন বাড়ল কাঁচা মরিচের দাম? জানতে চাইলে মহাখালী কাঁচা বাজারের বিক্রেতা শামসুর রহমান বলেন,
‘পাইকারি বাজারে কাঁচা মরিচের দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। বাজারে সরবরাহ কম, পাইকারি বাজারেই আমাদের অতিরিক্ত বাড়তি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে। সে কারণে সেই প্রভাব এসে পড়েছে খুচরা বাজারে। আগামী কিছুদিন বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ কম থাকার কারণে দাম এমন বাড়তি থাকবে। আবার যখন তুলনামূলক কম দামে আমরা পাইকারি বাজার থেকে কাঁচা মরিচ কম দামে কিনতে পারবো, তখন ক্রেতাদের কাছেও কম দামে কাঁচামরিচ বিক্রি করতে পারবো।’
গুলশান লেকপার বাজারের সবজি বিক্রেতা আইজুল বলেন,
‘কিছুদিন আগে কারওয়ানবাজারে প্রতিপাল্লা (৫ কেজি) কাঁচা মরিচের পাইকারি দাম পড়েছে ৮০০ টাকা। এখন সেই মরিচের দাম পড়ছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। আর দেশি মরিচ প্রতিপাল্লার দাম পড়ছে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা। যে কারণে খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচ ৩২০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বাজারে এখন কাঁচা মরিচের সরবরাহ একেবারেই কম। এর মূল কারণ কাঁচা মরিচের মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। বাজারে এখন যেসব কাঁচামরিচ আসছে সেসব ক্ষেতের একেবারে শেষ সময়ের মরিচ। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কমে গেছে বাজারে। সব মিলিয়ে বাজারে কাঁচামরিচের দাম বাড়তি যাচ্ছে। ঈদের সময় থেকে কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে। নতুন করে কাঁচা মরিচ ওঠার আগ পর্যন্ত এ দাম বাড়তিই থাকবে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন,
‘একে ঈদের সময় থেকে এখন পর্যন্ত রাস্তায় যানজট , ট্রাকে করে পরিবহন করার ভাড়া অনেক বেশি, সে কারণে ঢাকায় কাঁচা মরিচ তুলনামূলক কম আসছে। এ ছাড়া মৌসুমের শেষ, ক্ষেতে একেবারে শেষ সময় চলছে মরিচের। অনেক ক্ষেতের মরিচ শেষ হয়ে গেছে, নতুন করে লাগানো গাছে এখনো মরিচ আসতে শুরু করেনি। এসব কারণে পাইকারি বাজারেই কাঁচামরিচের সরবরাহ অনেক কমে গেছে। পাশাপাশি যে সময় নতুন করে মরিচ লাগানোর সময় ছিল, সে সময়ে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে কৃষক সঠিক সময়ে কাঁচা মরিচ লাগাতে পারেনি। সে সময় যদি কাঁচা মরিচের গাছ লাগানো যেত তাহলে হয়তো ক্ষেতের নতুন মরিচ এতদিন বাজারে চলে আসতো।’
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :