বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ- এ প্রশাসক নিয়োগ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী এক বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক বদিউজ্জামান দিদার নগদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-১ এর অভ্যন্তরীণ আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রসাশককে তার কার্যক্রমে সহযোগিতা করার জন্য নগদ- এ আরও ছয় কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন—পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের অতিরিক্ত পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, যুগ্ম পরিচালক আনোয়ার উল্ল্যাহ, পলাশ মন্ডল, উপ-পরিচালক চয়ন বিশ্বাস, মো. আইয়ুব খান এবং মতিঝিল অফিসের যুগ্ম পরিচালক আবু ছাদাত মোহাম্মদ ইয়াছিন।
কর্মকর্তারা জানান, ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর যাত্রা ২০১৯ সালের ২৬ মার্চে। শুরু থেকেই ‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে লাইসেন্স ছাড়া কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে মোবাইলে আর্থিক সেবা নগদ। এরপর রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে বিদায়ী সরকারের সময় লাইসেন্স নেয় নগদ ডিজিটাল ব্যাংক। নথিপত্রে ঘাটতি থাকার পরও এই অনুমোদন দেন সাবেক গভর্নর। এখন তথ্যে গরমিল বা উদ্যোক্তাদের যোগ্যতায় ঘাটতি পাওয়া গেলে সেই লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। কোনো ঘাটতি না মিললে কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেওয়া হবে।
গত জুনে দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে চূড়ান্ত লাইসেন্স পায় নগদ। আইনে বিশেষ ছাড় দিয়ে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’কে তফসিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইনে একক ব্যক্তি, পরিবার বা কোম্পানির কোনো ব্যাংকে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণে যে বিধিনিষেধ রয়েছে, তাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে নগদকে।
এদিকে চূড়ান্ত লাইসেন্স দেওয়ার দুই মাস পর নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের তথ্য খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি নগদের বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চিঠিতে বলা হয়েছে, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসির উদ্যোক্তা শেয়ারধারীদের তথ্য যাচাই করা প্রয়োজন। নগদের পাঁচটি বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান হলো ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস এলএলসি, অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনারস এলএলসি, জেন ফিনটেক এলএলসি, ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস পিটিই লিমিটেড এবং ট্রপে টেকনোলজিস এলএলসি। চিঠিতে এই পাঁচটি বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনপত্র যুক্ত করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের তথ্যাদি যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে সংগ্রহ করে জমা দিতে বলা হয়।
মোবাইলে আর্থিক সেবায় (এমএফএস) বিকাশের পরই এখন নগদের অবস্থান। তবে অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে চলেনি প্রতিষ্ঠানটি। ডাক বিভাগের সেবা বলা হলেও আদতে এতে সরকারের কোনো অংশীদারত্ব ছিল না। দফায় দফায় পরিবর্তন হয় নগদের মালিকানায়। প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। যথাযথ গ্রাহক তথ্য যাচাই (কেওয়াইসি) ছাড়াই মোবাইল ফোন গ্রাহকদের নিজস্ব গ্রাহক বানিয়ে ফেলার সুযোগ পায় নগদ।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :