ব্যক্তিগত সুরক্ষায়, ঘরের প্রয়োজনে এবং প্রসাধনী হিসেবে আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার করি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান গুলোর একটি ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল)। কারণ বর্তমানে দেশের প্রতি ১০টি পরিবারের ৯টি’তেই দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা মেটাতে ব্যবহার করা হয়- ইউনিলিভারের এক বা একাধিক পণ্য। শহর থেকে প্রত্যন্ত লোকালয়ে সবার কাছে ইউবিএল এর পরিচিত পণ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- লাক্স, লাইফবয়, সার্ফএক্সএল, ক্লোজআপ, সানসিল্ক, পন্ডস, ভ্যাসলিন, ডাভ ইত্যাদি। স্বনামধন্য ও নির্ভরযোগ্য এ প্রতিষ্ঠানটির এসব সফলতা অর্জনের সঙ্গী হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারও।
ইউনিলিভার বাংলাদেশ বৈশ্বিক কোম্পানি ইউনিলিভারের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। এটি আজ থেকে ৬ দশক বা ৬০ বছর আগে, ১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে ফ্যাক্টরি (কেজিএফ) স্থাপনের মধ্য দিয়ে এ বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে। প্রথমদিকে প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ধরনের সাবান উৎপাদন করলেও ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। পর্যাপ্ত মানসম্পন্ন হওয়ায় ইউনিলিভারের পণ্যগুলো সহজেই গ্রাহক ও ভোক্তাদের মন জয় করে নেয় ও বিস্তৃতি ঘটায়। বর্তমানে কোম্পানিটির সর্বমোট ২৫টিরও বেশি ব্র্যান্ড বাংলাদেশের মানুষের নিত্যদিনের প্রয়োজন মেটাতে অপরিহার্য ভূমিকা রাখছে।
শুধুমাত্র দেশের সর্বত্র গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পণ্য পৌঁছে দেওয়াই নয়, আধুনিক কল-কারখানা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিল্পায়নের প্রসার এবং কর্মসংস্থানও তৈরি করছে ইউনিলিভার। ইউবিএল এর সুশৃঙ্খল বিস্তৃত সাপ্লাই চেইনের পাশাপাশি বর্তমানে কোম্পানিটির ৭টি ফ্যাক্টরিও রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি নিজস্ব ফ্যাক্টরি এবং বাকি ৬টি কন্ট্রাক্ট ম্যানুফেকচারিংয়ের আওতায় ইউনিলিভারের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন পণ্য প্রস্তুত করে থাকে। বলাই বাহুল্য যে, ইউবিএল এর ৯৫ শতাংশ পণ্যই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও প্রক্রিয়াজাত করা হয়। কোম্পানিটি প্রত্যক্ষভাবে ১৫ শ এর বেশি এবং পরোক্ষভাবে ২১ হাজারের অধিক কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এ দেশে।
যৌথ মালিকানাধীন ‘ইউনিলিভার বাংলাদেশ’ এ বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের অংশীদারিত্ব রয়েছে উল্লেখযোগ্য ৩৯.২৫ শতাংশ। অংশীদার হিসেবে সরকার মুনাফা বুঝে পাবার পাশাপাশি কোম্পানির জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনায়ও ভূমিকা পালন করে। ২০১৩ সাল থেকে টানা ৬ বছরসহ মোট ৮ বছর শীর্ষ করদাতা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি পেয়েছে ইউবিএল।
ইউনিলিভার কেবল ব্যবসায়িক সম্প্রসারণই নয়, টেকসই লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনে বদ্ধপরিকর। আর এজন্য পরিবেশ দূষণ কমিয়ে আনতে ফ্যাক্টরির আধুনিকায়ন, প্লাস্টিক সার্কুলারিটি বাস্তবায়ন, লিঙ্গবৈষম্যে রোধ, শোভন কর্মপরিবেশ তৈরি ইত্যাদি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে, যা সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত। বৈচিত্র্যময় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মক্ষেত্র তৈরি ও কর্মীদের সুরক্ষায় অবদান রাখায় প্রতিষ্ঠানটি ১১ বার ‘নাম্বার ওয়ান এমপ্লয়ার চয়েস’ অ্যাওয়ার্ড পাবার গৌরব অর্জন করেছে।
ইউনিলিভার বিশ্বাস করে- তরুণদের যথাযথভাবে দক্ষ করে তোলা এবং গ্রামীণ অর্থনীতি জোরদারের মাধ্যমে দেশের কাঙিক্ষত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। তাই ‘পল্লীদূত’ উদ্যোগের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বল্প শিক্ষিত বেকার তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ। এছাড়া- ‘স্কুল অব লিডার্স’ নামে পরিচিত ইউনিলিভার ভবিষ্যত নেতৃত্ব তৈরির জন্য তরুণদের অংশগ্রহণে ‘বিজমায়েস্ট্রোস’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে যাচ্ছে। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে তরুণরা বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাচ্ছে।
এভাবেই বহুমুখী উদ্যোগের মাধ্যমে একটি সম্ভাবনাময় আগামী বিনির্মাণে ইউনিলিভার বাংলাদেশ বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :