বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। একটি দেশের অর্থনীতি কতটা শক্তিশালী, তা পরিমাপ করার উপায় হলো জিডিপি। মানুষ কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে পণ্য ও সেবা কিনছে, বিনিয়োগ করছে, সরকারি ব্যয় ও রপ্তানির মোট মূল্য; সব কিছু পরিমাপ করা হয় জিডিপি দিয়ে। এ তালিকার প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে ৩টিই এশিয়ার। শক্তিশালী অর্থনীতির এ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থায় ৩৫তম।
আইএমএফের বিচারে এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অ শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এ বছর দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৭ শতাংশ। আর জিডিপি ২৮ দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালে তাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২২ সালে এই হার ছিল ২ দশমিক ১ শতাংশ। ১৯৬০ সাল থেকেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী দেশের তকমা ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জনগণের মাথাপিছু আয় ৮৫ হাজার ডলার।
দ্বিতীয় স্থানে আছে আরেক অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীন। তাদের বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার এ বছর ৪ দশমিক ৬ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থাৎ, দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারে ০ দশমিক ৬ শতাংশ অবনতি ঘটেছে। এরপরও চীনের জিডিপি যুক্তরাষ্ট্রের খুব কাছাকাছি; ১৮ দশমিক ৫৩ ট্রিলিয়ন ডলার। দেশটির জনগণের মাথাপিছু আয় ১৩ হাজার ডলার।
তালিকায় তৃতীয় দেশটির নাম জার্মানি। ইউরোপের শিল্পোন্নত এই দেশটির বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার এবার ০ দশমিক ২ শতাংশ। আগের বছর এই হার ছিল ঋণাত্মক (-০ দশমিক ৩ শতাংশ)। অর্থাৎ এ বছর তাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার বেড়েছে ০ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি বছর জার্মানির মোট জিডিপি ৪ দশমিক ৫৯ ট্রিলিয়ন ডলার; মাথাপিছু আয় ৫৪ হাজার ডলার।
জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার গত বছরের তুলনায় ১ শতাংশ কমে গেলেও শীর্ষ অর্থনীতির দেশের তালিকায় চতুর্থ স্থানে ঠাঁই পেয়েছে জাপান। দেশটির প্রবৃদ্ধির হার এবার ০ দশমিক ৯ শতাংশ। মোট জিডিপি ৪ দশমিক ১১ ট্রিলিয়ন ডলার। মাথাপিছু আয় ৩৩ হাজার ডলার। প্রকৌশল, গাড়ি নির্মাণ, রাসায়নিক ও ওষুধ খাতে তাদের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে।
আইএমএফের এ তালিকায় ৫ নম্বরে আছে বিশ্ব অর্থনীতিতে উদীয়মান পরাশক্তি হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ভারত। দেশটির বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার এবার ৭ দশমিক ০ শতাংশ। অবশ্য আগের বছর এই প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। ভারতের মোট জিডিপি এই মুহূর্তে ৩ দশমিক ৯৫ ট্রিলিয়ন ডলার। আর মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৩১ মার্কিন ডলার।
এদিকে বাংলাদেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। শীর্ষ অর্থনীতির দেশের তালিকায় এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৫তম। বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার এবার ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৬ দশমিক ০ শতাংশ। মোট জিডিপি ৪৫৫ বিলিয়ন ডলার। আর মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪৬ মার্কিন ডলার।
কোন দেশের অর্থনীতি কতটা শক্তিশালী, তা পরিমাপ করার উপায় হলো জিডিপি। মানুষ কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে পণ্য ও সেবা কিনছে, বিনিয়োগ করছে, সরকারি ব্যয় ও রফতানির মোট মূল্য; সব কিছু পরিমাপ করা হয় জিডিপি দিয়ে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত এক বছর) একটি দেশের মধ্যে উৎপাদিত এবং বাজারে বিক্রি হওয়া সব পণ্য ও পরিষেবার সামষ্টিক মূল্যই হলো জিডিপি।
একুশে সংবাদ/ডে.বা/আ.টি/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :