AB Bank
ঢাকা রবিবার, ০৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সবজির বাজারে শীতের হাওয়া, চাল ও মাছের বাজারে উত্তাপ


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
১২:৫২ পিএম, ৩ জানুয়ারি, ২০২৫
সবজির বাজারে শীতের হাওয়া, চাল ও মাছের বাজারে উত্তাপ

সরবরাহ বাড়ায় শীতকালীন শাক-সবজির দাম বাজারে দ্রুত কমছে, যা জনমনে স্বস্তি এনেছে। তবে চাল ও মাছের ঊর্ধ্বমুখী দাম সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি করেছে।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) কেরানীগঞ্জের আগানগর, রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজার পরিদর্শনে এই চিত্র দেখা গেছে।

পৌষের মাঝপথে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বাজারগুলোতে শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ বাড়ছে। দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসেছেন, যার ফলে শাক-সবজির দাম কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা জাবেদ জানান, সরবরাহ বাড়ার কারণে সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু শাক-সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তিনি আশা করছেন, সরবরাহ আরও বাড়লে দাম আরও কমবে।

বাজারে মানভেদে সবজির দাম ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। প্রতি কেজি বেগুন ৪০-৫০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, লতি ৫০-৬০ টাকা এবং পটোল ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পেঁপে ৩০ টাকা, গাজর ৩৫-৪০ টাকা, ক্ষিরাই ৪০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৪০-৫০ টাকা, দেশি পাকা টমেটো ৬০-৮০ টাকা, শিম ২৫ টাকা, শালগম ২০ টাকা এবং শসা ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ৩০ টাকা, পেঁয়াজের কলি ২০ টাকা, পাতাসহ পেঁয়াজ ৩০ টাকা, নতুন আলু ৪৫ টাকা এবং পুরাতন আলু ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ২০-২৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, ব্রকলি ৩০-৪০ টাকা এবং লাউ ৪০-৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

কাঁচা মরিচের দামও কমেছে। খুচরা পর্যায়ে এটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০-৮০ টাকায়, আর পাইকারিতে ৪০-৬০ টাকায়। এছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২৫-৩০ টাকা, লাউশাক ৩০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা এবং পালংশাক ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম কমতে শুরু করায় ভোক্তাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাদের ভাষ্যে, শাক-সবজির দাম কমায় পরিবারের বাজেটে খানিকটা ভারসাম্য এসেছে। ফয়সাল নামে এক ক্রেতা বলেন, “বাজারে সবজির দাম এখন অনেকটাই হাতের নাগালে। সবসময় যদি বাজার এমন থাকত, তবে আরও স্বস্তি পাওয়া যেত।”

সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরলেও মাছের বাজার এখনও চড়া। বিশেষ করে ইলিশের বাজার সপ্তাহের ব্যবধানে আরও অস্থির হয়ে উঠেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সুস্বাদু এ রুপালি মাছ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ইলিশ বিক্রেতা মো. আলী জানান, ইলিশ কম ধরা পড়ায় বাজারে সরবরাহ কমে গেছে, যার ফলে দাম বাড়ছে। দিন দিন ইলিশের দাম ভোক্তাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, ফলে বিক্রিও কমে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকায়। এছাড়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩২০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২০০০ টাকা, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২০০ টাকা এবং ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত।

তবে অন্যান্য মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০-২৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০-৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০-৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২৩০ টাকা এবং তেলাপিয়া ১৮০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, প্রতি কেজি বোয়াল ৭৫০-৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০-৪৫০ টাকা, আইড় ৮৫০-৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১,৩০০-১,৭০০ টাকা, শিং ১,৪০০-১,৫০০ টাকা, শোল ৯০০-১,০০০ টাকা এবং নদীর পাঙাশ ৯০০-১,২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, ভরা মৌসুমেও চালের বাজারে স্বস্তি নেই, যা ভোক্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। বিক্রেতারা জানান, গত তিন সপ্তাহে চিকন চালের দাম কেজিতে ৪-৮ টাকা এবং মোটা ও মাঝারি চালের দাম ২-৩ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৭৬-৮০ টাকা, আটাইশ ৬০-৬২ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৫ টাকা এবং পোলাও চাল ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাশেম রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, “দেশের বিভিন্ন জেলায় আমন ধান উঠেছে, বাজার এখন চালে ভরপুর। তাই দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। এটি আসলে ব্যবসায়ীদের বাজার লুটের কৌশল। বাজারের পাশাপাশি মিলগুলোতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।”

থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষের কারণে অস্থির হওয়া মুরগির বাজারে দাম ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে এখনো বাজার চড়া অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২০০-২১০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৪০-৩৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার মুরগি ২৪০ টাকা এবং লাল লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জাতভেদে প্রতি পিস হাঁসের দাম ৬০০-৬৫০ টাকা।

মুরগির বাজারে অস্থিরতা চললেও ডিমের বাজার তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩৮-১৪০ টাকা, সাদা ডিম ১৩৫ টাকা, হাঁসের ডিম ২৩৫-২৪০ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজারেও তেমন পরিবর্তন হয়নি। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১,০৫০-১,১০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। ক্রেতাদের অভিযোগ, নিয়মিত মনিটরিং না থাকায় বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান। অন্যদিকে, বিক্রেতাদের বক্তব্য, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন, যা বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে। নিয়মিত অভিযান চালানো হলে এই অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমানো সম্ভব হবে।

 

একুশে সংবাদ/এনএস

Link copied!