বাংলা নববর্ষের আগমনে ইলিশ মাছের চাহিদা বাড়ায় বাজারে হঠাৎ করে এর দাম আকাশছোঁয়া হয়ে উঠেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ইলিশের দাম প্রতি কেজিতে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোববার (১৩ মার্চ) কারওয়ান বাজার, মালিবাগ, শান্তিনগর ও যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এক কেজি ওজনের একটি ইলিশের দাম উঠেছে ৩,০০০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া মাঝারি আকৃতির ইলিশের কেজি ২৮০০-৩০০০ টাকার নিচে মিলছে না। আর সবচেয়ে বড় আকৃতির ইলিশ মাছের দাম ৩৫০০-৩৭০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, ইলিশের দাম বাড়িয়ে এক ধরনের ‘বৈশাখী বাণিজ্য’ চলছে। পহেলা বৈশাখে ইলিশ ছাড়া যেন উৎসবই পূর্ণ হয় না, সেই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তারা সরকারের কাছে এর প্রতিকার চেয়েছেন।
খোকা মাহমুদ নামে এক ক্রেতা বলেন, মাঝারি সাইজের দুইটা ইলিশ কিনতে গিয়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হলো। এমন হলে তো সাধারণ মানুষ এই উৎসব থেকেই বঞ্চিত হবে।
রুপা নামের আরেক ক্রেতা জানান, বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ কিনতে এনেছি। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় কিনতে পারছি না। আগে ১৫০০-১৮০০ টাকায় ২টা মাঝারি ইলিশ পেতাম, এখন একটা কিনতেই ১৫০০ টাকা লাগছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে হঠাৎ করেই ইলিশের চাহিদা বেড়ে গেছে। কেননা চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। কারণ, মৌসুম না থাকায় সাগরে বা নদীতে খুব বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে না। এ ছাড়া নিষিদ্ধ মৌসুম হওয়ার কারণে সব নদীতে জেলেরা জাল ফেলতে পারছেন না। এর ফলে পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দাম বেড়েছে।
মাছ বিক্রেতা মো. নূর ইসলাম জানান, তারা এখন ২ ধরনের ইলিশ বিক্রি করছেন। একটি হচ্ছে কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষণ করা ইলিশ অন্যটি টাটকা ইলিশ। কোল্ড স্টোরেজের ছোট আকৃতির ইলিশ মাছ ১২০০- ১৩০০ টাকা কেজি এবং মাঝারি ও বড় আকৃতির মাছ ২৪০০-৩০০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর টাটকা মাছের মধ্যে ছোট ও মাঝারি আকৃতির ইলিশ ১২০০-২৫০০ টাকা এবং বড় আকৃতির টাটকা ইলিশ ৩৫০০-৩৭০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
তিনি জানান, একটা সময় ছিল যখন ইলিশ মাছ খাওয়ার খুব প্রচলন ছিল। এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে। তারপরও ভালোই বিক্রি হচ্ছে। একেবারে খারাপও না আবার বেশি ভালোও না।
মো. আফিস মাহমুদ সজিব নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, নদীতে এখন আগের মতো ইলিশ ধরা পড়ে না। চাহিদা অনেক, কিন্তু জেলেরা মাছ পাচ্ছেন না। ফলে দাম বাড়ছেই।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :