বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নবম দিনের মতো অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন শিক্ষকরা। এ আন্দোলন চলা অবস্থায় মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) করোনার শিখনঘাটতি রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিতে কঠোর নির্দেশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। কিন্তু ওই নির্দেশনায় আরও ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার (১৯ জুলাই) সকালে নবম দিনের মতো অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন শিক্ষকরা।
সকাল থেকেই প্রেসক্লাবের সামনে ফুটপাতে বসে বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষক নেতারা। এসময় কদম ফোয়ারা থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত শিক্ষকরা অবস্থান নেন। তাদেরকে শ্লোগান দিতে দেখা যায়। তোপখানা সড়কের পল্টন-কদম ফোয়ারা এবং কদম ফোয়ারা-পল্টন মোড় অংশে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে এই পথে চলাচল করা যানবাহনগুলোকে আব্দুল গণি সড়ক ব্যবহার করে চলাচল করতে হচ্ছে। যাত্রী ও পথচারীরা বিপাকে পড়েছেন।
এসময় পথচারীরা বলেন, ‘প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তা বন্ধ। তাই মৎস্যভবন পর্যন্ত রাস্তা জ্যাম হয়ে গেছে। বাস সচিবালয়ের সামনে দিয়ে ঘুরে জিরো পয়েন্ট মোড়ে যাবে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হবে।’
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ডাকে গত ১১ জুলাই থেকে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত রোববার ও সোমবার সারাদেশে ক্লাস বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। লাগাতার অবস্থানের একপর্যায়ে সোমবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মাউশির মাধ্যমিক ও কলেজ শাখা পরিচালক, একজন উপপরিচালক ও পুলিশের কয়েকজন সদস্য।
এদিকে আন্দোলনের ৮ম দিনের মাথায় করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের শিখনঘাটতি রোধে ব্যবস্থা নেয়াসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা দেয় মাউশি। এসব নির্দেশনা না মানলে ব্যবস্থা নেয়ারও ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
অনুপস্থিত শিক্ষকদের প্রতি মাউশির কড়া বার্তা
নির্দেশনাগুলো হলো— প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সক্রিয় তদারকি, শিক্ষকদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কার্যকর ভূমিকা, কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণে গৃহীত বিশেষ ব্যবস্থা কার্যকর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে কোনরূপ মিথ্যা ও উসকানিমূলক প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করা, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।
মাউশির এমন নির্দেশনার পরও আন্দোলন থেকে সরে আসেননি বেসরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকরা। বুধবার নবম দিনের মতো অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন তারা।
বিটিএ’র সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা দাবি আদায় না হলে মাঠ ছাড়ব না। দাবি নিয়েই সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হচ্ছে। আলোচনা চলমান অবস্থায় গতকাল মাউশি যে চিঠি দিয়েছে তা শিক্ষকদের আরও উত্তেজিত করেছে। যে শিক্ষকরা স্কুলে তালা দিয়ে ঢাকায় এসেছে তাদের চিঠি দিয়ে ক্লাসে ফেরানো সম্ভব হবে না। তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি নিয়ে আজ শিক্ষামন্ত্রী সঙ্গে বসার কথা রয়েছে।’
একুশে সংবাদ/ঢ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :