সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পাচ্ছেন প্রায় ২৮ হাজার সহকারী শিক্ষক। পদোন্নতির কার্যক্রম প্রায় শেষ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। শিগগিরই পর্যায়ক্রমে পদোন্নতি-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, শিক্ষকদের গ্রেডেশন তালিকা চূড়ান্ত করে ধারাবাহিকভাবে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। আশা করছি, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্শেষ বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, বর্তমানে দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এসব বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৭ জন। শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫ জন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্র জানায়, এরই মধ্যে কিশোরগঞ্জ, মেহেরপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার পূর্ণাঙ্গ গ্রেডেশন তালিকা এবং টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার ১১টি উপজেলার তালিকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাই শেষে সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) পাঠানো হয়। পিএসসি এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরের পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকদের তালিকা চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এখন নিয়ম অনুযায়ী অফিস আদেশ জারি করবে মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ৩০ জুন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ ছিল ২৯ হাজার ৮৬২টি। এর মধ্যে নিয়ম অনুযায়ী ২৭ হাজার ৯০৭ জন সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পাবেন। তবে অবসরের কারণে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ বাড়লে পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকের সংখ্যাও বাড়বে। আর বাকি ১ হাজার ৯৫৫টি পদ সরাসরি নিয়োগের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এই নিয়োগ হবে পিএসসির মাধ্যমে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি রাজেশ মজুমদার বলেন, দীর্ঘদিন পর সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দেওয়ার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়মিত পদোন্নতিরও দাবি জানাচ্ছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে সারাদেশে পদোন্নতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণ বন্ধ ছিল। ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষকের পদ দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। এতে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ ও পদোন্নতি পিএসসির অধীনে চলে যায়। ২০১৭ সালের ২৩ মে থেকে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয় সহকারী শিক্ষকদের।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, সারা দেশের সহকারী শিক্ষকদের গ্রেডেশন তালিকা চূড়ান্ত করা নিয়ে বড় ধরনের জটিলতা ছিল। এ সমস্যা উত্তরণে ‘সমন্বিত গ্রেডেশন ব্যবস্থাপনা’ নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। এর পরই ডিজিটাল পদ্ধতিতে চূড়ান্ত হয় গ্রেডেশন তালিকা। অধিদফতরের বর্তমান মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের বেশ কিছু উদ্যোগে পদোন্নতি-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন হয়েছে। এ কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পলিসি এবং অপারেশন) মনীষ চাকমা।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :