১৯৯৫ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘বরসাত’। এই ছবিতে অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ধর্মেন্দ পুত্র ও সানি দেওলের ভাই ববি দেওল। ‘বরসাত’ ছবির মাধ্যমেই বড় পর্দায় প্রথম মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। প্রথম সুযোগেই বাজিমাত করেন অভিনেতা। খবর আনন্দবাজারের।
একদিকে ধর্মেন্দ্রের পুত্র, অন্যদিকে সানি দেওলের ভাই। বাবা এবং দাদা দুজনেই বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা। ববি দেওলও যে তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে অভিনয়ে নামবেন তা কারও অজানা ছিল না। কিন্তু বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর আগেই এক বলি অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ববি। পাঁচ বছর সম্পর্কে থাকার পর তাদের বিচ্ছেদও হয়ে যায়। কিন্তু কেন?
জনপ্রিয়তার ছোঁয়া পাওয়ার আগেই বলি অভিনেত্রী নীলম কোঠারির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ববি। বলিপাড়া সূত্রে খবর, নীলম এবং ববি টানা পাঁচ বছর সম্পর্কে ছিলেন। তাদের বিয়ে হওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু পাঁচ বছর পর দুই তারকার সম্পর্কে ভাঙন ধরে।
আশির দশকে বলিউডে নিজের কেরিয়ার গড়ে তোলেন নীলম। ববি অভিনয়ে নামার আগে তার সঙ্গে পরিচয় হয় নীলমের। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম, তার পর সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন দু’জনে। তখন কানাঘুষো শুরু হয় ববির সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়তে চলেছেন নীলম। কিন্তু তাদের সম্পর্কের আয়ু ফুরিয়ে যায়। তা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। নেপথ্যকারণ হিসাবে কখনও অন্য বলি অভিনেত্রীকে আবার কখনও ধর্মেন্দ্রকে দেখানো হয়েছে।
১৯৯৬ সালে এক শিল্পপতির কন্যা তানিয়াকে বিয়ে করেন ববি। ববির বিয়ের চার বছর পর ২০০০ সালে ব্রিটেনের শিল্পপতির পুত্র ঋষি শেঠিয়াকে বিয়ে করেন নীলম। কিন্তু তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার পর ২০১১ সালে অভিনেতা সমীর সোনিকে বিয়ে করেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে নীলম তার সঙ্গে ববির সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। পাঁচ বছর সম্পর্কে থাকার পর কেন বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলেন তাও খোলসা করেন নীলম।
নীলম জানান, তার সঙ্গে ববির বিচ্ছেদের কারণ হিসাবে অনেকে বলি অভিনেত্রী পূজা ভাটকে দায়ী করেন। নীলমের দাবি, পূজার সঙ্গে তাদের সম্পর্কে চিড় ধরার কোনও যোগাযোগ নেই। এগুলো সব অসত্য, মিথ্যা রটনা বলে জানান নীলম। বলেন, আমি ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করা একদম পছন্দ করি না। কিন্তু তা নিয়ে অসত্য কথা ছড়িয়ে পড়ুক তা-ও চাই না। পূজার সঙ্গে আমার আর ববির সম্পর্কের কোনও যোগ নেই। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত পুরোপুরিভাবে আমাদের দু’জনের নেওয়া।
নীলমের মন্তব্য, জানি পাঁচ বছর অনেকটা লম্বা সময়। কিন্তু আমি হঠাৎ এক দিন বুঝতে পারি যে ববির সঙ্গে আমি ভাল থাকব না। ববিকে সে কথা জানাই। ববিও পরে বুঝতে পারে যে আমাদের ভবিষ্যৎ সুখের নয়। তাই সম্পর্কে ইতি টানব বলে যুগ্ম ভাবে সিদ্ধান্ত নিই।
খ্যাতনামী তারকার স্ত্রী হয়ে থাকাতেই নাকি ভয় পেতেন নীলম। সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেন অভিনেত্রী। নীলম বলেন, ববি তখন অভিনয়জগতে পা রাখতে চলেছে। আমি নিজেকে ওঁর জীবনসঙ্গিনীর জায়গায় রেখে ভেবেছিলাম। তখনই খুব ভয় পেয়ে যাই। বড় মাপের তারকার স্ত্রী হয়ে কীভাবে সারা জীবন কাটাব, তা ভেবে ভয় পেয়ে যাই আমি।
সাক্ষাৎকারে নীলম বলেন, আমি যখন কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি তখন আমাকে কেউ সেই জায়গা থেকে টলাতে পারে না। দেরি করে হলেও আমি বুঝেছিলাম যে ববির সঙ্গে ভবিষ্যতে থাকতে পারব না। ববিও একমত ছিল। তাই পাঁচ বছরের সম্পর্ক ভেঙে যায়।
নীলম এবং ববির সম্পর্ক কেমন ছিল সে প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আমি ওকে নিয়ে কখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগিনি। অল্পস্বল্প নিরাপত্তাহীনতা সব প্রেমিকারই থাকে। আমারও সেটুকুই ছিল। অন্য প্রেমিকও যেমন তার প্রেমিকার প্রতি অধিকারবোধ দেখায়, ববিও তাই করত। ভালবাসা থেকে যতটুকু অধিকারবোধ জন্মায় ততটুকুই। এটা খুবই স্বাভাবিক।
তবে বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ববি এবং নীলমের বিচ্ছেদের নেপথ্যে রয়েছেন ধর্মেন্দ্র। ধর্মেন্দ্র চাইতেনদুই পুত্র যেন কোনও বলি অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে না জড়ান। সেই কারণেই নাকি নীলমের সঙ্গে ববির সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। যদিও এ প্রসঙ্গে নীলম বলেন, আমার আর ববির বিচ্ছেদের জন্য কোনও তৃতীয় ব্যক্তি দায়ী নয়। অনেক রকম কথা আমার কানে আসে। সবই মিথ্যা রটনা।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :