মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে করাচির মেয়ে এরিকা রবিন প্রথম মিস ইউনিভার্স পাকিস্তানের মুকুট পরেছেন। মিডিয়ার খবর; এরিকা রবিন এখন নভেম্বরে এল সালভাদরে ৭২তম গ্লোবাল মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
এদিকে, মিস ইউনিভার্স পাকিস্তানের প্রথম প্রতিযোগী এরিকা রবিনকে নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। রক্ষণশীল মুসলিম দেশটিতে এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিভিন্ন মহলে। বিশেষ করে আয়োজক সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার। কিভাবে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া এরিকা রবিনকে এই আয়োজনের জন্য আয়োজকরা খুঁজে পেলেন দেশের গোয়েন্দা সংস্থাকে তা তদন্ত করে দেখার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন উইওয়ান।
এতে বলা হয় মিস ইউনিভার্স পাকিস্তান প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করছেন এরিকা রবিন। এতে সারাদেশে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। দেশবাসী এরিকা রবিনের অংশগ্রহণ করানোর জন্য আয়োজকদের ধুয়ে দিচ্ছেন। বলা হচ্ছে, এতে দেশের সম্মতিই নেয়া হয়নি। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে সুন্দরী প্রতিযোগিতা বিরল। সেই হিসেবে কেউ কেউ এই প্রতিযোগিতায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে একজন মেয়েকে পাঠানোকে বড় পদক্ষেপ হিসেবেও দেখছেন।
এরিকা রবিনের বয়স ২৫ বছর। তিনি করাচির একজন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের যুবতী। মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত পর্বে অন্য চার প্রতিযোগীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মিস ইউনিভার্স পাকিস্তান খেতাব অর্জন করেন। তার সঙ্গে চূড়ান্ত পর্বে যারা প্রতিযোগিতা করেন তারা হলেন হিরা ইনাম (২৪), জেসিকা উইলসন (২৮), মালিকা আলভি (১৯) ও সাব্রিনা ওয়াসিম (২৬)।
এ বছর শেষের দিকে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করার কথা এরিকা রবিনের। নভেম্বরে এই প্রতিযোগিতা হবে এল সালভাদরে। ২০২২ সালে মিস ইউনিভার্স হয়েছিলেন আর’বনি গাব্রিয়েল। ৭২ বছরের ইতিহাসের মধ্যে এরিকা রবিনই প্রথম পাকিস্তান থেকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এরিকা রবিনের কাছে তার দেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।
জবাবে তিনি বলেন, পাকিস্তান একটি পশ্চাৎপদ জাতির দেশ, এই ধারণাকে তিনি বদলে দিতে চান। কিন্তু তিনি যে পরিবর্তনের কথা বলছেন এই মনোনয়ন তার সেই ইচ্ছাকে কতটুকু সফল হতে দেবে তা বলা কঠিন।
তিনি মিস ইউনিভার্স পাকিস্তান খেতাব জেতার পর জামায়াতে ইসলামির সদস্য সিনেটর মুশতাক আহমেদ বলেছেন, পাকিস্তানে এই সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজক কারা? কারা এই লজ্জাজনক কাজ করছে।
শুধু তিনিই নন দেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ঘটনা পুরো জাতির জন্য লজ্জার। পাকিস্তানি নারীদের জন্য অপমানজনক ও তাদের জন্য বিভ্রান্তিকর।
বিতর্কের জবাবে এরিকা রবিন পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করার বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। তবে এই সমালোচনার ফলে তার ভিতরে দ্বিধাদ্বন্দ্বও কাজ করছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে আমার কাছে খুবই আনন্দ লাগছে। আমি জানি না কোথা থেকে এসব পশ্চাৎপদ ধারণা আসছে। আমার মনে হয় এই ধারণা এসেছে সুইমস্যুট পরে পুরুষভর্তি একটি রুমে প্যারেড করা থেকেই।
‘মিস ইউনিভার্স পাকিস্তান’র মুকুট পরলেন এরিকা, মন্ত্রী বললেন ভিন্ন কথা
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :