শুক্রবার গোধূলি আলোয় এল সেই শুভক্ষণ। চার হাত এক হল ওপার বাংলার সৌরভ দাস এবং দর্শনা বণিকের। বাইপাসের ধারে একটি ব্যাঙ্কোয়েট হলে বসল বিয়ের আসর। তারকার মেলা বললেও কম নয়।
নিজেদের সম্পর্কের কথা কোনও কালেই খুব একটা প্রকাশ্যে আনেননি সৌরভ এবং দর্শনা। দীর্ঘ দিন ধরে অনিন্দিতার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সৌরভের। দু’জনে একত্রবাসও করতেন। সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়।
দর্শনা এবং সৌরভের পরিচয় কয়েক জন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মাধ্যমে। দীর্ঘ দিন ধরেই তারা কাছের বন্ধু। তবে সেই বন্ধুত্ব ঠিক কবে প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয়েছে, সে বিষয়ে খোলসা করে জানাননি দু’জনের কেউই।
পরিচিতেরা বলেন, প্রায় এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে সৌরভ এবং দর্শনার। তবে দু’জনের কেউই তা কখনও স্বীকার করেননি। সেই নিয়ে খুব একটা মুখও খোলেননি।
দর্শনাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন সৌরভ। দর্শনা অবশ্য নিজে কোনও জবাব দেননি। বদলে সৌরভকে তার বাড়িতে গিয়ে বিয়ের কথা বলতে বলেন। রাজি হয়ে যান সৌরভ। দর্শনার বাড়িতে গিয়ে বিয়ের কথা বলেন। রাজি হয় পরিবার। রাজি হন দর্শনা।
তার পরেই দু’জনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, এই অগ্রহায়ণেই ছাঁদনাতলায় বসবেন দু’জনে। যেমন কথা, তেমন কাজ। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু করে দুই পরিবার।
বাঙালি রীতি মেনেই বিয়ে সারতেন চেয়েছিলেন সৌরভ, দর্শনা। আচার-অনুষ্ঠান থেকে খাদ্যাভ্যাস, সবেতেই রয়েছে বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। আইবুড়োভাত, গায়েহলুদ- সবই হয়েছে ধুমধাম করে।
বৃহস্পতিবার ছিল আইবুড়ো ভাত। লাল পেড়ে সাদা তসর বেনারসি পরে আইবুড়ো ভাত খেতে বসেছিলেন দর্শনা। খাবারের তালিকাতেও ছিল একেবারে বাঙালিয়ানা ছোঁয়া। পাঁঠার মাংস, চিংড়ি, ভেটকি- সব ছিল মেনুতে।
শুক্রবার সকালে মিটেছে গায়েহলুদের পর্ব। দর্শনা পরেছিলেন হলুদ রঙের সিল্কের শাড়ি আর স্লিভলেস ব্লাউজ। আমেরিকা থেকে এসে গিয়েছেন দর্শনার দাদারা। বাড়িভর্তি লোকজনের মাঝে ধুমধাম করে হয়েছে গায়েহলুদ।
অন্যদিকে, দু’দিন আগে থেকেই আলোয় সাজানো হয়েছে সৌরভের বেহালার বাড়ি। বাড়িতে হাজির আত্মীয়স্বজন। শুক্রবার বেশ সকাল সকাল সৌরভের গায়েহলুদ দিয়েছেন তাঁর মা। সব আচার-অনুষ্ঠানের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন বর-কনে।
বিয়ের অনুষ্ঠানেও থাকছে সাবেকিয়ানার ছোঁয়া। লাল বেনারসিতে সেজেছেন দর্শনা। বেনারসিতে মুগা জরির কাজ। গায়ে সোনার গয়না। কপালে সোনার টিকলি। নাকে নথ।
সৌরভ পরেছেন সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি। গায়ে জড়ানো লাল রঙের শাল। সৌরভের গলায় রয়েছে সোনার চেন। চোখে চশমা। হাতে ঘড়ি।
বিয়ের বিভিন্ন বিষয়ে থাকছে নতুনত্বের ছোঁয়া। তবে বাঙালিয়ানাকে মাথায় রেখেই। দর্শনার হাতে যে গাছকৌটো থাকছে, তাতে আঁকা রয়েছে বর এবং কনের ছবি।
বিয়ের মেনুও সাবেকি বাঙালি। পোলাওয়ের সঙ্গে মাছ, মাংসের পদ রয়েছে। ফিশ ফ্রাই, ভেটকির পাতুরি, চিংড়ির মালাইকারি, পোলাও, পাঁঠার মাংস- এই পদ দিয়েই হবে অতিথি আপ্যায়ন।
বিয়ের নিমন্ত্রিতদের তালিকায় থাকলেন বর-কনের প্রিয় বন্ধুরা। রুপোলি জগতের অনেককেই দেখা গেল বিয়েতে। নীল ভট্টাচার্য, তৃণা সাহা, সৌম্যজিৎ আদক, সোহিনী সরকার- তালিকা আরও দীর্ঘ।
বর-কনে বিয়ের পর কোথায় মধুচন্দ্রিমা যাচ্ছেন, তা এখনও প্রকাশ করেননি। তবে খবর, মার্চে বেড়াতে যাচ্ছেন তারা। সূত্র : আনন্দবাজার
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :