কয়েকদিন আগেই অস্কারজয়ী ভারতীয় সুরকার এ আর রহমানের ব্যক্তিগত স্টুডিওতে গান রেকর্ড করেছেন বাংলা গানের যুবরাজ খ্যাত সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর।
এবার ভক্তদের আরও একটি বড় সুখবর দিলেন এই সংগীতশিল্পী। মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক হয়েছে আসিফের। বৃহস্পতিবার রাতে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টি জানিয়েছেন গায়ক নিজেই।
সেই স্ট্যাটাসে আসিফ লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আমার অভিষেক ঘটেছে। প্রিয় বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছি। আল্লাহ মহান। ভালোবাসা অবিরাম।’
যদিও কোন গান বা সিনেমায় কণ্ঠ দিয়েছেন আসিফ, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি। তবে গায়কের সেই পোস্টে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানিয়েছেন ভক্ত-সহশিল্পীরা। প্রিয় তারকাকে বলিউডে দেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন তারা।
এর আগে সম্প্রতি মুম্বাইয়ের ‘কেএম’ স্টুডিওতে গান রেকর্ড করেছেন আসিফ। এ আর রহমানের স্টুডিওতে গান রেকর্ডিংয়ের বিষয়টিকে সৌভাগ্য হিসেবে দেখছেন এই তারকা। ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে নিজের সেই অভিজ্ঞতার গল্প তুলে ধরেছেন আসিফ।
যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘মুম্বাই এসেছি কিছু রেকর্ডিংয়ের কাজে। গতকাল দুটো গানের ভয়েস দিলাম শ্রদ্ধেয় এ আর রহমান স্যারের কেএম স্টুডিওতে। কমপক্ষে পনেরো হাজার স্কয়ার ফিটের সুবিশাল স্টুডিও। ভেতরে ঢুকেই মনটা ভালো হয়ে গেল, কি চমৎকার পরিবেশ! যাঁরা ওনার কাছে মিউজিক ক্লাস করেন তাঁদের জন্য ছাদে শেড দেওয়া সুন্দর খোলামেলা স্কুল। ওনার ব্যক্তিগত স্টুডিওতে গাওয়ার অনুমতি পেয়েছি, এটা পরম সৌভাগ্য আমার জন্য। ভয়েস রুমের টেম্পারেচার কেমন হওয়া উচিত সেটার অভিজ্ঞতাও পেলাম।’
দেশের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আক্ষেপ ঝেড়ে আসিফ লিখেছেন, ‘এখানে (ভারতে) শিল্পী মিউজিশিয়ানদের পেশাগত নিরাপত্তার চমৎকার সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে রাখা হয়েছে। আমাদের দেশ এসবের ধারেকাছেও নেই। রাষ্ট্রীয় কিছু উদ্যোগ থাকলেও চামচিকা আর উলু খেয়ে ফেলে সব।’
আসিফ মনে করেন মিউজিক এবং মিউজিশিয়ানদের বাঁচাতে রাষ্ট্রের উদ্যোগ জরুরি। আসিফের কথায়, ‘সমিতি আর নির্বাচনী কাবাডি খেলা নিয়ে ব্যস্ত সবাই। আস্তে আস্তে ক্ষয়ে গেছে সব প্রতিষ্ঠান। আমারও খুব একটা কিছু করার সক্ষমতা নেই। বিভক্তি বিভাজনের করাল গ্রাসে কোমায় চলে গেছে ইন্ডাস্ট্রি। সংগীতকে ভালোবেসে ফেলেছি, তাই টিকে থাকার সংগ্রামে আছি। বয়সও বেড়েছে, হইচই করতে আর ভালোও লাগেনি। শৌখিন এবং মৌসুমি প্রযোজকদের সঙ্গে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি, মান নিয়ন্ত্রণ করতেই হচ্ছে। রাষ্ট্র, প্লিজ একটা কিছু করুন। মিউজিক এবং মিউজিশিয়ানদের বাঁচান।’
পোস্টের প্রথমে আসিফ দেশের রমরমা অডিও ইন্ডাস্ট্রির অতীত মনে করেছেন। যখন দেশেও অনেক ভালো মানের স্টুডিও ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যাপ্তি বাড়ার কথা থাকলেও হয়েছে এর উল্টো।
আসিফ লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে পেশাদার রেকর্ডিং স্টুডিওগুলো সব বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে তৈরি হয়েছে সুউচ্চ বিল্ডিং। বাসাবাড়িতে কিংবা ছোট খুপরির মতো সব স্টুডিও বানিয়ে মাটি কামড়ে মিউজিক করছে মিউজিশিয়ানরা। যেখানে ইন্ডাস্ট্রি আরও বিশাল হওয়ার কথা সেখানে সংকুচিত হয়ে এসেছে আমাদের পৃথিবী।’
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :