ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসসহ আট জাতীয় দিবস বাতিল করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে তথ্যগুলো।
এই সিদ্ধান্তের পর নেটিজেনরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এই ইস্যুতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী, গায়িকা ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন।
শাওন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ জাতীয় দিবস হিসেবে বাতিল করা হলো আজ! আমি মেহের আফরোজ শাওন বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে অন্তবর্তীকালীন সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করলাম। কিছুদিন পর দেখা যাবে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস বাদ, নতুন স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ৩৬ জুলাই পালিত হবে হয়তো!’
শাওন আরও লিখেছেন, ৭ মার্চের পক্ষে বলার জন্য যদি আমাকে ‘দালাল’ উপাধি পেতে হয় তবে আমি দালাল। আমি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দালাল, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দালাল।
এদিকে এই সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমে শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক ও মুক্তিযোদ্ধা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, কাজী নওশাবা আহমেদ, নূনা আফরোজসহ অনেকেই।
প্রসঙ্গত, বুধবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে আওয়ামী লীগ বিতর্কিত করেছে। তাকে আপনারা ‘জাতির পিতা’ মনে করেন কি না? এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দল হিসেবে ফ্যাসিস্টভাবে ক্ষমতায় ছিল। মানুষের ভোটাধিকার হরণ ও গুম-খুন করে এবং গণহত্যা করে তারা ক্ষমতায় ছিল। কাজেই কারা তাকে জাতির পিতা বলল, তারা কোন দিবসকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করল, নতুন বাংলাদেশে সেটার ধারাবাহিকতা থাকবে না। আমরা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গঠন করতে চাচ্ছি। ফলে ইতিহাসের প্রতি আমাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে হবে।’
জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে ৭ মার্চকে বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘৭ মার্চ গুরুত্বপূর্ণ, তবে জাতীয় দিবস হওয়ার মতো না। আওয়ামী লীগ অনেক দিবসকে নষ্ট করে ফেলেছে।’
৭ মার্চ নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে না জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান অবশ্যই জাতির জনক না। এই ভূখণ্ডে অনেকেরই ভূমিকা রয়েছে, লড়াই রয়েছে। ইতিহাসের বহুমুখিতা রয়েছে। আওয়ামী লীগ মাওলানা ভাসানীর অবদানকে অস্বীকার করেছে। তাই এখন সময় এসেছে সবার ভূমিকা স্মরণ করার।’
৫ আগস্টকে প্রাধান্য দিয়ে একটি জাতীয় দিবস প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে বলে জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের গুরুত্ব হিসেবে কোনো কোনো দিবস প্রতিষ্ঠিত করা হতে পারে। আপাতত ৫ আগস্টকে প্রাধান্য দিয়ে একটি জাতীয় দিবস প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। নতুন বাংলাদেশে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। চাইলেই আমলাতন্ত্র পুরো বাতিল করা যাবে না। প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। অভিযোগ যে কারও বিরুদ্ধেই হতে পারে। তাই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ সবার কথাকে গুরুত্ব দেওয়া। জনগণের সমর্থন নিয়েই কাজ করছে সরকার।’
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :