শিল্প সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ না থাকা এবং নাট্যকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সমাধান চেয়েছেন নাট্যকর্মীরা। শনিবার (৯ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লাকী ইনাম, সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজিদ, দেশ নাটকের দলপ্রধান নাট্যকার মাসুম রেজা, অধ্যাপক মলয় ভৌমিকসহ অন্যান্য সদস্যরা।
নাটকের মানুষ এমন কি করেছে? দুষ্টকৃতিকারীরা কারা? তাদের অভিযোগ টা কী? সংস্কৃতিকর্মীরা কি আওয়ামী লীগের দোসর? এদেশে নিরাপদে শিল্প সংস্কৃতি চর্চা করতে পারব কি না? এমন অসংখ্য প্রশ্ন তোলা হয় জরুরি সম্মেলনে।
অভিযোগ তোলা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধেও। তারা মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেননি। তাই অভিনয়ের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না হওয়া পর্যন্ত আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন তারা। এরপর সংগঠনটি থেকে জানানো হবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত।
দুষ্কৃতিকারীদের হামলার সুষ্ঠু তদন্তের দাবির পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থা নিয়ে শিল্পচর্চার পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে সমাধান চান তারা।
গত ১ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চস্থ করা হয় মঞ্চনাটক ‘নিত্যপূরাণ’। কিন্তু দুর্বৃত্তদের তোপের মুখে পড়ে মঞ্চনাটক প্রদর্শনীর মাঝপথেই তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির সামনে সমাবেশের ডাক দেয় বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন।
সমাবেশে নাট্যকার ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ বলেন, সমাজে যে বৈষম্য, সে বৈষম্যেরও একটা গভীরতর বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে এই নিত্যপূরাণ নাটক।
তার বক্তব্যের মাঝেই ‘ধর, ধর’ চিৎকারে চারদিকে শোরগোল শুরু হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভবনের দিক থেকে ডিম ছুড়ে মারা হয়। এরপর সাধারণ জনতা দাবি করা কয়েকজন লোক স্লোগান দিয়ে বলেন, ‘নিত্যপূরাণ’ নাটক প্রদর্শনী আর হতে দেবেন না তারা।
এরপর পরিস্থিতি হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছায়। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। শিল্পকলা একাডেমির প্রবেশদ্বারে অবস্থান নেন নাট্যকর্মীরা।
অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিবাদে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘সভা শেষ করব না। ভেতরে নাটক হবে, বাইরে আমরা পাহারা দেব। এতে দুষ্কৃতিকারীরা আরও বেপোরোয়া হয়ে ওঠেন। ভবিষ্যতে দেখে নেয়ারও হুমকি দেন।
ন্যাক্কারজনক এ হামলার প্রতিবাদ ও দেশে নিরাপদে শিল্পসংস্কৃতির প্রচারের দাবিতে আজ জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :