বর্তমান বিশ্ব ধীরে ধীরে মৃত্যপুরীতে রূপ নিচ্ছে। এর অন্যতম কারণ প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়া। দালানকোঠা তৈরি করার জন্য গ্রামে-গঞ্জে গাছ অনেক কাটা হয়, খেঁজুর গাছ তার অন্যতম।
শুক্কুর আলী একজন গুড় তৈরির শিল্পী, গ্রামের ভাষায় বলে গাছি। গুড় তৈরির জন্য মাসের পর মাস বাড়ী থেকে দূরে খোলা জায়গায় তাঁবু অথবা টিনের ঘর বানিয়ে থাকতে হয় এই গাছিদের। কুয়াশায় শীতের রাতে কাঁপতে কাঁপতে গাছে উঠে রস নামায় তারা, আলো ফোঁটার আগেই সনাতন পদ্ধতিতে খেঁজুর/পাটালি গুড় বানায় এই কারিগররা। যখন এই খেঁজুরের রস গাঢ় সোনালী রং নিয়ে গুড়ে রুপান্তরিত হয়, দেখতে বেশ নান্দনিক লাগে। খেজুরের রস বানানোর পদ্ধতি অত্যন্ত মজার। সবচেয়ে বড় কথা এটা বানাতে বা সংরক্ষণে কোনো রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয় না।
আর গুড় তৈরির এই কর্মকাণ্ড নিয়ে ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে দেশী নির্মাতা ঝুমুর আসমা জুঁই- এর প্রামাণ্য চলচ্চিত্র রসের কুটুম`।
সিনেমা বক্স প্রযোজিত `রসের কুটুম`-এর প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হবে ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার, বিকেল সাড়ে ৫টায়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে।
আন্তর্জাতিক এই চলচ্চিত্র উৎসবে `রসের কুটুম`-এর দ্বিতীয় প্রদর্শনী হবে ১৮ জানুয়ারি, শনিবার, সন্ধ্যা ৭টায়, জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে।
দেশের নির্মাতাদের মধ্য লোকজ শিল্প নিয়ে যারা সিনেমা নির্মাণ করেন তাদের মধ্যে ঝুমুর আসমা জুঁই অন্যতম।
এর আগে ২১তম ও ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জুঁইয়ের নির্মিত `দ্যা লক্ষণ দাস সার্কাস` এবং `পালকি` প্রশংসিত হয়। জুঁইয়ের উল্লেখযোগ্য প্রামান্য চলচ্চিত্র, `ভাস্কর্য ও মাটির ময়না`, `পুতুল পুরাণ`, `রথ যাত্রার বাকি ইতিহাস` ইত্যাদি।
`রসের কুটুম` প্রসঙ্গে নির্মাতা ঝুমুর আসমা জুঁই বলেন, `খেজুরের গুড় তৈরির ইতিহাসকে ধরে রাখার তাগিদ অনুভব করলে গুড় তৈরির এই সনাতন পদ্ধতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতেই হবে। কারণ গুড় তৈরির জার্নিতে যে পরিশ্রম হয় তার প্রতিদান কারিগররা কখনোই পান না।``
তিনি বলেন, `খেজুরের গুড়ের গুণগত মান কিন্তু আকর্ষণীয়। খেঁজুরের রস ও গুড় বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। এতে দেশ ও গুড়ের কারিগর উভয়ই উপকৃত হবে।`
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :