একদল ব্যক্তির হুমকির মুখে স্থগিত হলো ‘ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব’। নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে উৎসব স্থগিতে বাধ্য হওয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর নাট্য পর্ষদের আহ্বায়ক ঠান্ডু রায়হান।
তিনি বলেন, “অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে, সকলের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ভালোবাসায় আয়োজন করা প্রাণের নাট্যোৎসব আপাতত স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছি।”
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার নাটক সরণির মহিলা সমিতি মিলনায়তনে এই উৎসব উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল। উৎসবের তিনটি পর্যায়ে একটি করে নাটক মঞ্চস্থ করার কথা ছিল ৮৫টি নাট্যদলের।
আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় মহিলা সমিতিতে কিছু লোক এসে উৎসব নিয়ে আপত্তি তোলে। উৎসব হলে হামলা করারও হুমকি দেয় তারা।
এ বিষয়ে উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব কামাল আহমেদ বলেন, “শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমাদের জানান যে, রমনা থানা থেকে ফোনে নাট্যোৎসব বন্ধ করতে বলা হয়েছে। আমরা উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে রমনা থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করি। সন্ধ্যায় আমরা ওসি সাহেবের সাথে তার অফিসে সাক্ষাৎ করি এবং উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তাকে অবহিত করি।”
উৎসবের জন্য পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নেয়া হয়েছিল কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে কামাল আহমেদ বলেন, “মিলনায়তনে আমরা যে নাটকের প্রদর্শনী করি, তার জন্য তো পুলিশ থেকে অনুমতি নেয়া হয় না। এখানে তো বিদেশি নাট্যদলের অংশগ্রহণও নাই। যে দলের নাটকের শো হবে, তারা তো নিয়মিতই নাটকের প্রদর্শনী করছে। এ ধরনের আয়োজনের জন্য পুলিশ বা সরকারের কোনো অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন হয় না।”
থানায় আলোচনার পর পুলিশ নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাস দিলে নিরাপত্তা সহযোগিতা চেয়ে একটি আবেদনপত্র জমা দেয়া হয় বলে জানান তিনি। তবে থানার ওই বৈঠকের খবর পেয়ে ‘উত্তেজিত কিছু লোক’ এসে মহিলা সমিতি প্রাঙ্গণে উৎসবের সাজসজ্জা খুলে ফেলে বলে ভাষ্য আয়োজকদের।
কারা এই হুমকি দিয়েছে, তারা পরিচয় দিয়েছে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব কামাল বলেন, “বিগত দিনেও একটি নাট্যদলের নাটক বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শো-এর মাঝপথে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল এবং এর প্রতিবাদে নাট্যকর্মীরা যখন সমাবেশ করছিল; তখন নাট্যজন মামুনুর রশীদসহ উপস্থিত নাট্যকর্মীদের ওপর যারা হামলা করেছিল, আজকের ঘটনা তারই পুনরাবৃত্তি বলে আমরা মনে করি।”
মহিলা সমিতির দায়িত্বশীল একজন বলেন, “এই উৎসবকে ঘিরে মহিলা সমিতিতে হামলা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এজন্য আমরা আয়োজকদের পরিস্থিতি জানিয়েছি। তারা উৎসব স্থগিত করেছেন।”
এ ব্যাপারে রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক শনিবার দুপুর সোয়া ২টায় বলেন, “আমি মিটিং এ আছি। পরে কথা বলব।” পরে বিকেল পৌনে ৪টায় ফোন করা হলে তিনি আর সাড়া দেননি। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নাই।”
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :