বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের জনপ্রিয় গায়িকা ও অভিনেত্রী কানন বালা দেবী—আজ তাঁর জন্মদিন। "আমি বনফুল গো, ছন্দে ছন্দে দুলি আনন্দে..."—জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই বিখ্যাত গানটি মনে হলেই, প্রথম যে কণ্ঠটি শ্রোতার মনে ভেসে ওঠে, তা হলো এইচএমভি রেকর্ডের সেই অমলিন কণ্ঠ—কানন বালা দেবীর।
১৯১৬ সালের ২২ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় জন্মগ্রহণ করেন এই কিংবদন্তি শিল্পী। অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা কাননের জীবন ছিল সংগ্রামের প্রতীক। মাত্র ৯ বছর বয়সে মাকে নিয়ে ঠাঁই নেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে, যেখানে মা ঝি-এর কাজ করতেন। সেখান থেকে তাঁর পথচলা শুরু হয় ম্যাডান থিয়েটারে, যেখানে ১২ বছর বয়সে তিনি প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান।
১৯২৬ সালে মুক্তি পায় কানন দেবীর প্রথম ছবি ‘জয়দেব’, যা ছিল নির্বাক চলচ্চিত্র। পরবর্তীতে ১৯৩১ সালে বাংলা ভাষার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সবাক ছবি ‘জোর বরাত’-এর নায়িকা হিসেবেও পর্দায় আসেন তিনি।
শুধু অভিনয় নয়, গানের প্রতিও ছিল অগাধ ভালোবাসা। তিনি নিজে গান শিখেছেন দারিদ্র্যের মাঝে থেকেও। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্বয়ং তাঁকে গান শেখাতেন, সুর তুলে দিতেন। এমনকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও তাঁর কণ্ঠে গান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন। গানে, অভিনয়ে ও নৃত্যে ছিলেন সমান দক্ষ।
কানন বালা দেবীর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন “দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার”, “পদ্মশ্রী” এবং আরও অসংখ্য সম্মাননা। তাঁর মতো শিল্পী বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
আজ এই কিংবদন্তি শিল্পীর জন্মদিনে আমাদের গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধাঞ্জলি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :