আপনি কি জানেন ১০ হাজার বছর আগে বাংলাদেশের আয়তন কত ছিল? আমি বলে দিচ্ছি, মাত্র ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার; যা এখনকার তিন ভাগের এক ভাগ। কখনও কি ভেবেছেন ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার থেকে কিভাবে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬০ বর্গ কিলোমিটার হয়ে গেল?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি বছরই বাংলাদেশের ভূখণ্ডে যুক্ত হচ্ছে নতুন জমি। এটি বছরে ১০ বর্গকিলোমিটার করে বাড়ছে। কিন্তু কিভাবে বাড়ছে চলুন জেনে নেই-
১৯৫০ সালে আসাম ভূমিকম্পে বদলে দিয়েছে অনেক কিছুই। ভূমিকম্পের ৭০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের আয়তন বেড়েছে ১৭২০ বর্গকিলোমিটার। দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক ২০২১ অনুসারে, বাংলাদেশের বর্তমান আয়তন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬০ বর্গ কিলোমিটার।
ভূমিধসে হিমালয় থেকে নেমে আসা বিপুল পরিমাণ পলি নেমেছে নদী পথে। ওই সময়েই নোয়াখালী ও ফেনীর বেশির ভাগ ভূমি গড়ে ওঠে।
সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস-সিইজিআইএস-এর নির্বাহী ও গবেষক ড. মাইনুল হক সরকারের মতে, বাংলাদেশের আয়তন কখনো বেড়েছে, কখনো কমেছে। তিনি জানান, ১৮৫০ থেকে ১৯৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ভূমি কমেছে ৩৩৩ বর্গকিলোমিটার। আর গত ৮০ বছরে যুক্ত হয়েছে প্রায় দুই হাজার বর্গকিলোমটার নতুন ভূমি। ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সাল এই ২০ বছরে গড়ে ১০ বর্গকিলোমিটার করে ভূমি বাড়ছে।
কেন বাড়ছে আয়তন? এই বাড়া-কমার কারণটা কী? সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর বাংলাদেশের ৭০ থেকে ৭৫ বর্গকিলোমিটার নদী ভাঙনের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে। পলি পড়ে জেগে উঠছে ৮৫ বর্গকিলোমিটার ভূমি।
বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর এ কে এম সাইফুল ইসলাম বলেন, নেদারল্যান্ড সেডিমেন্ট ম্যানেজ করার মধ্য দিয়ে অনেক ভূমি বৃদ্ধি করেছে। আমাদের এখানেও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে যদি বাঁধ দেওয়া যায়, অ্যাফোরেস্টেন করে সেডিমেন্টটা ধরে রাখতে পারি এবং ম্যানেজ করতে পারি; তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনের যে ধাক্কাটা আসছে, যেমন সি লেভেল রাইজ— এগুলো ম্যানেজ করতে পারবো।
সিইজিআইএসের গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা ও পদ্মা নদী দিয়ে ১২০ কোটি টন পলি বয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়ে। এই পলি নদীগুলোর দুপাশে ও মোহনায় জমে জন্ম দেয় নতুন ভূখণ্ডের।
একুশে সংবাদ/ন.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :