AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলে বাহারি প্রজাপতি

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রজাপতি সংরক্ষণ জরুরি


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
১১:০৫ এএম, ৫ নভেম্বর, ২০২৩
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রজাপতি সংরক্ষণ জরুরি

প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলে বাহারি প্রজাপতি

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রজাপতি সংরক্ষণ জরুরি

-হৃদয় দেবনাথ-


শের নানা প্রান্তে তথাকথিত উন্নয়নের নামে নির্বিচারে বন জঙ্গল পাহাড় উজাড় এবং প্রকৃতি ধ্বংসের কারণে  অন্যান্য প্রাণীদের মতো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দেশের  প্রজাপতিকূলও। দে বিশেষ করে প্রকৃতি কন্যা খ্যাত মৌলভীবাজার জেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ,কুরমা বনবিট ,রেমা কালেংগা বন্যপ্রাণী অরণ্য খ্যাত স্থানগুলোতে দেশের মোট তিনশ’ প্রজাতি প্রজাপতির মধ্যে বেশিরভাগই এখন বিলুপ্তির শঙ্কায় পড়েছে। মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন বন্যপ্রাণী এবং কীট পতঙ্গের  বাসযোগ্য স্থানগুলোতে বিলুপ্তির শঙ্কায় পড়েছে দুর্লভ প্রজাতির অনেক প্রজাপতি।পরিবর্তিত প্রাকৃতিক পরিবেশে একে তো আবাস হারাচ্ছে নিরীহ প্রজাপতি, তারওপর মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে প্রজাপতির স্বাভাবিক প্রজনন।প্রজাপতি মানেই বাহারি রঙের ছটা। যে রঙ মানুষের মনে জন্ম দেয় নান্দনিকতার সুর। নান্দনিকতার পাশাপাশি প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় প্রজাপতির রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। পরিবেশ ও প্রকৃতির সৃষ্ট সুবিশাল ভূমিতেই মানবসমাজের বাস। মানুষ সমাজে বসবাস করে এবং প্রকৃতি থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। যে অক্সিজেন আসে গাছপালা থেকে। যে গাছপালা সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করে প্রজাপতি নামক এই ক্ষুদ্র প্রাণীটি। প্রজাপতি বিভিন্ন উদ্ভিদের মধ্যে পরাগায়ন ঘটিয়ে নতুন নতুন উদ্ভিদের জন্ম দেয়। প্রজাপতির পরাগায়নের মাধ্যমেই উদ্ভিদকুল বংশবিস্তারের সুযোগ পায়। যে উদ্ভিদ বড় হয়ে একসময় বনভূমিতে পরিণত হয় এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। প্রজাপতি একদিকে যেমন বিভিন্ন ঔষধি গাছের সন্ধান দেয় তেমনি পরিবেশ বিপর্যয়ের নমুনাও প্রদান করে। প্রজাপতিরা বিভিন্ন গাছে গাছে ঘুরে বেড়ায় এবং গাছেই বংশবিস্তার করে। বিভিন্ন ফুল গাছের ফুল থেকে মধু আহার হিসেবে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। দেশে প্রায় ৩০০ প্রজাতির প্রজাপতির সন্ধান মিললেও বর্তমানে দেশে ১০০ প্রজাতির প্রজাপতির দেখা পাওয়া যায়।


প্রজাপতি শুধু বংশবিস্তারই ঘটায় না বরং সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনেও সাহায্য করে। প্রচলিত সোলার প্যানেলের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি সৌরশক্তি ধারণ করতে সক্ষম প্রজাপতির পাখনা। যে সৌরশক্তি থেকে উচ্চতর ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা সম্ভব।প্রতিবছর বিশ্বে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রজাপতি কেনাবেচা চলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে। এর মধ্যে ইংল্যান্ড, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন প্রজাপতি রফতানি করে প্রতিবছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে।এ ছাড়াও প্রজাপতি একটি অর্থকরী প্রাণী। প্রজাপতি রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রজাপতির রয়েছে পর্যাপ্ত চাহিদা। বাংলাদেশে তাই বাণিজ্যিকভাবে প্রজাপতি উৎপাদন করে রফতানি করার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এই সম্ভাবনাময় শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।


প্রজাপতি হলো পরিবেশ ও প্রকৃতির প্রাণ। প্রজাপতি আমাদের জীবন রক্ষা করে। অথচ আমরা সেই প্রজাপতি রক্ষার বিপরীতে ধ্বংস করছি। নির্বিচারে গাছপালা কেটে ফেলছি, বনভূমি ধ্বংস করে বসতভিটা নির্মাণ করছি। এতে প্রজাপতি বাসস্থান হারাচ্ছে, বংশবিস্তার করতে পারছে না। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে যা জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। যত বেশি গাছ হবে তত বেশি প্রজাপতি পাওয়া যাবে। তাই আমাদের সবার উচিত বেশি বেশি গাছ লাগানো। প্রজাপতির বিলুপ্তি ঠেকাতে বনাঞ্চল রক্ষা ও বনাঞ্চলে প্রজাপতি পার্ক তৈরির তাগিদ গবেষকদের।প্রজাপতি রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের সেমিনার, মেলা ও সচেতনতামূলক পাপেট শো-এর আয়োজন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি সমাজে, গ্রামে সচেতনতামূলক পোস্টার, ব্যানার, মাইকিং ও বায়োস্কোপের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে প্রজাপতি বাঁচলে বাঁচবে প্রকৃতি, বাঁচবে মানবসমাজ দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়খ্যাত একমাত্র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে প্রজাপতি পার্ক। যে পার্কে রয়েছে ৯০ প্রজাতির প্রজাপতি। প্রতিবছর যেখানে প্রজাপতি রক্ষায় সচেতনতামূলক প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যেখানে প্রজাপতি সম্পর্কিত বিভিন্ন শো এবং প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা, জীবন্ত প্রজাপতি প্রদর্শনী, প্রজাপতির আকৃতির ঘুরি প্রদর্শনী, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও ডকুমেন্টারিসহ বাহারি আয়োজন হয়ে থাকে। দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি এভাবে প্রজাপতি মেলার আয়োজন করা হয় তাহলে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা যাবে।বর্তমান ইন্টারনেট সুবিধার ফলে ছোট বড় প্রায় সবার হাতেই স্মার্টফোন ও ফেসবুক রয়েছে। ফেসবুক ব্যবহার করে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবার পাশাপাশি সচেতনতামূলক পোস্ট করা যায়। সমাজের সচেতন মহল যদি প্রজাপতি ও প্রকৃতি রক্ষার গুরুত্ব ফেসবুক ব্লক বা টাইমলাইনে পোস্ট করে তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই তা সবার কাছে পৌঁছানো সম্ভব।দেশের স্কুল-কলেজের পাঠক্রমে প্রজাপতি পাঠ চালু করা বিশেষ প্রয়োজন। এতে করে ছোট থেকেই শিশুরা প্রজাপতি সম্পর্কে জানতে পারবে এবং প্রজাপতির গুরুত্ব অনুধাবন করতে শিখবে। প্রজাপতি মানেই রঙের দুনিয়া। যে রঙ খুব সহজেই শিশুদের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম। শিশুরা যদি ছোটকাল থেকেই জানতে পারে যে প্রজাপতি থাকলে বন থাকবে এবং বন থাকলে বৃষ্টি হবে তাহলে তারা প্রজাপতির প্রতি যত্নবান হবে। প্রজাপতি না ধরে তাকে স্বাধীনভাবে উড়তে দেওয়ার গুরুত্ব বুঝতে পারবে। আমাদের চারপাশে কত কীটপতঙ্গের বিচরণ। এদের মধ্যে সবচেয়ে রুপসী এককথায় প্রজাপতি। প্রজাপতি দেখতে পুরোটাই সুন্দর। বিশেষ করে এর রঙ বেরঙের পাখাগুলো। কি যে সুন্দর দেখতে। আবার যারা এর পাখাগুলো হালকাভাবে হাত দিয়ে স্পর্শ করেছেন তারা হয়ত খেয়াল করে থাকবেন এই ছোট্ট ছোট্ট পাখাগুলো থেকে রঙ হাতে লেগে যায়। আমরা প্রজাপতিকে হয়ত সাদা চোখে সবাই চিনি কিন্তু এর সম্পর্কে এমন ১০ টি বিষয় রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানি না। আসুন জেনে নেই।  

প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলে বাহারি প্রজাপতি



প্রজাপতির পাখাগুলো বেশ স্বচ্ছ হয়ে থাকে :
আপনারা খেয়াল করে দেখবেন প্রজাপতির পাখাগুলো বেশ স্বচ্ছ হয়ে থাকে। পৃথিবীর সব ধরনের পোকামাকড়ের মধ্যে প্রজাপতিই সবচেয়ে রঙিন এবং স্পন্দনশীল।প্রজাপতির পাখাগুলো আসলে এক ধরনের চিটিন নামক প্রোটিনের স্তর দিয়ে তৈরি যেগুলো প্রাণীটিকে উড়তে সহায়তা করে। এই স্তরগুলো এত পাতলা যে এর ভেতর দিয়ে সবকিছুই দেখা যায়। হাজার হাজার হালকা তুলার মত পদার্থ স্বচ্ছ চিটিনের চারপাশে বেষ্টন করে থাকে যেগুলোকে আলো পড়লে তা প্রতিফলিত হয়ে বিভিন্ন রঙের তৈরি করে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই হালকা তুলার মত পদার্থগুলো পাখা থেকে খসে পড়ে যায় এবং একসময় পাখাগুলোর উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়। 


পা দিয়ে স্বাদ গ্রহণ :
প্রজাপতি তার পা গুলো দিয়ে কোনোকিছুর স্বাদ গ্রহণ করে থাকে। পা গুলোকে ব্যহার করে সে কোনো উদ্ভিদ বা বিভিন্ন খাবার খুঁজে বেড়ায়। মেয়ে প্রজাপতি বিভিন্ন গাছের উপরে বসে এবং দুই পা দিয়ে কোনো ফুলকে জড়িয়ে ধরে এর রস আস্বাদন করে থাকে। প্রজাপতির পা গুলোর উপরে মেরুদন্ডের কাছে একটি কেমোরেসিপটরস থাকে যা বিভিন্ন গাছের রাসায়নিক পদার্থের কোনো মিল খুঁজে পেলে সেখানে সে তার ডিমগুলো স্থাপন করে যায়। এভাবে পা দিয়েই তারা বিভিন্ন খাবারের এবং তাদের বাসস্থানের স্বাদ গ্রহণ করে থাকে। 

তরল খাবার খেয়ে বেঁচে থাকে :
প্রাপ্ত বয়স্ক প্রজাপতি সবসময় তরল জাতীয় খাবার যেমন মধু খেয়ে থাকে। এরকম তরল খাবার ছাড়া এরা কঠিন খাবার খেতে পারে না। তাদের মুখে হাতির শুঁড়ের মত এক ধরনের নলাকার বস্তু থাকে যা দিয়ে তারা বিভিন্ন গাছের বা ফুলের মধু খেয়ে থাকে এবং এভাবেই জীবন ধারণ করে থাকে। 

গুটিপোকার ক্ষেত্রে হাতিশুঁড়কে কাজে লাগায় :
একটি প্রজাপতি স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন মধু খেয়ে থাকে। কিন্তু নতুন বয়সে মাঝেমাঝেই সে গুটিপোকাকেও আক্রান্ত করে। এক্ষেত্রে তার মুখটি দুটি অংশে ভাগ হয়ে যায়। 

প্রজাপতি কাদাখানা থেকেও পান করে থাকে :
প্রজাপতি শুধু মধু খেয়ে বাঁচতে পারে না এদের কিছুটা মিনারেলেরও প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই মধু আহরণের পাশাপাশি মাঝে এটি কাদাখানাতেও চুমুক দিয়ে থাকে যেটিতে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল এবং খনিজ লবণ থাকে। এই কাজটি বেশিরভাগ সময়ে পুরুষ প্রজাপতিটি করে থাকে কেননা এই মিনারেল তাদের স্পার্ম তৈরিতে সহায়তা করে। প্রজননের সময় এই মিনারেল স্ত্রী প্রজাপতির দেহে স্থানান্তর হয় যার ফলে এদের ডিমের কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে তোলে। 

ঠান্ডা মৌসুমে প্রজাপতিরা উড়তে পারে না :
প্রজাপতিদের স্বাভাবিকভাবে উড়তে ৮৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়ে থাকে। এটি একটি শীতল রক্তযুক্ত প্রাণী, এর ফলে তারা তাদের দৈহিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে না। এজন্য পরিবেশের তাপমাত্রা তাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে। বাইরের তাপমাত্রা যদি ৫৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে থাকে তাহলে তারা নড়াচড়া করতে পারে না এমনকি তারা তাদের আহার সংগ্রহে যেতেও পারে না। তাপমাত্রা ৮২-১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে থাকলে প্রজাপতি খুব সহজেই চলাফেরা করতে পারে। শীত মৌসুমগুলোতে প্রজাপতিদের চলাফেরার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের তাপের প্রয়োজন হয়। 

নতুন জন্মগ্রহণ করা প্রজাপতি উড়তে পারে না :

নতুন জন্মগ্রহণ করা প্রজাপতির গায়ের সাথে এর পাখাগুলো লেগে থাকে। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় তার সারা দেহ শুষ্ক হওয়ার জন্য। পাখাগুলোকে ছড়িয়ে দিয়ে গুটিপোকা সাহায্য করে থাকে। তার পাখা পুরোপুরিভাবে খুলে যাওয়ার পরে সে প্রথমবারের মত উড়তে পারে। 

২-৪ সপ্তাহ বেঁচে থাকে :

একটি প্রজাপতির আয়ুস্কাল মোটামুটিভাবে ২-৪ সপ্তাহ। এতটুকু সময়ের মধ্যে তারা শুধুমাত্র দুটি কাজই করে থাকে খাওয়া এবং প্রজনন করা। এদেও মধ্যে নীল রঙের ছোট প্রজাপতিগুলো মাত্র কয়েকদিনই বেঁচে থাকে। 

এরা অদূরদর্শী হয়ে থাকে :

১০-১২ ফুটের মধ্যে প্রজাপতিরা সচরাচর দেখতে পারে, এর বেশি দেখতে পারে না। এরা বড় বড় কাজের ক্ষেত্রে চোখগুলোকে কাজে লাগায় যেমন সঙ্গী খোঁজা, খাবার সংগ্রহ ইত্যাদি। এছাড়া প্রজাপতি অতিবেগুণী রশ্মিও এমন একটি পরিসীমা দেখতে পায় যেটি মানুষ দেখতে পারে না। 

খাবার সংগ্রহে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ :
প্রজাপতিরা তাদের খাবার সংগ্রহে একসাথে দল বেঁধে গমন করে থাকে। কোনো ধরনের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এরা মাঝেমাঝে এদের পাখাগুলোকে গুটিয়ে রাখে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে এরা এদের পাখার রঙও পরিবর্তন করে থাকে।প্রকৃতিতে অত্যান্ত সুন্দর ও আকর্ষনীয় একটি প্রাণীর নাম প্রজাপতি। সমাজে এমন কোন মানুষ নেই যে প্রজাপতিকে ভালবাসেনা। প্রজাপতির শরীর খুবই উজ্জল ও আকর্ষণীয় বলে এই সুন্দর প্রাণীটি সহজেই সকলের নজর কাড়ে। গাছের ছোট বড় শাখা থেকে শুরু কের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে এদের দেখা মেলেনা। নানান রঙ্গের বিভিন্ন সব প্রজাপতি তাদের রঙ্গিন ডানা ঝাপটে এরা উড়ে চলে।


তাদের সেই দৃষ্টিনন্দন ডানা উড়িয়ে চলার দৃশ্য দেখে সমাজের সব শ্রেণির মানুষের মুখে যেন অজান্তেই হাসি চলে আসে। দেশ কিংবা বিদেশের সব ধরনের চলচিত্র পাড়ায় নাটক কিংবা সিরিয়ালের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যে রয়েছে এই সুন্দর মনোরম প্রকৃতির অপরুপ সৃষ্টি দৃষ্টিনন্দন প্রজাপতির ব্যবহার। রয়েছে প্রজাপতি নিয়ে নাটক সিনেমা এবং শত শত গান কবিতা। বাস্তব হোক কিংবা বাস্তবের বাইরে রঙবেরঙের প্রজাপতি দেখলেই সব শ্রেণির মানুষের অবুজ অবলা ও কঠিন মনটি ভালো হতে বাধ্য।তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু দেশেই নই গোটা পৃথিবী জুড়ে রয়েছে প্রজাপতির ব্যবহার। তবে বাংলার প্রকৃতিতেই রয়েছে ৩শ এর বেশি প্রজাতির প্রজাপতি আর গোটা পৃথিবীতে রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার ৫শ এর অধিক প্রজাতির প্রজাপতি। রয়েছে এর নানা ব্যবহার নানা রঙ আর রয়েছে সবার নানা জাত ও নানান নাম। প্রতিটি প্রজাপতিই তাদের জন্মের পর থেকে তিন অথবা চার সপ্তাহ বেঁচে থাকে। প্রজাপতি এমন একটি প্রাণি যার গুন রহস্য ও শাররীক গঠন নিয়ে বর্ণনা করতে গেলে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা শেষ হয়ে যাবে পাশাপাশি শেষ হয়ে যাবে কলমের পর কলম।সুনন্দ বর্ণিল প্রজাপতি নিয়ে কাব্য সাহিত্যে আছে নানা বর্ণনা। প্রকৃতির অনুসঙ্গ এ প্রজাপতি যেন মায়াবি মুগ্ধ পতঙ্গ। আর এই প্রজাপতি নামক প্রতঙ্গটি যেন নিস্বর্গের অলংকার স্বরুপ। অনাবিল সৌন্দর্যের প্রজাপতি যেন সৃষ্টিকর্তার নিজ হাতে গড়া এক শিল্পিত প্রাণ। তবে প্রজাপতি যে শুধু মাত্র তার সৌন্দর্য দিয়েই মানুষের মন ভরে দেয়না, এর অপরুপ সৌন্দর্যের পাশাপাশি রয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তার একটি হলো মৌমাছির মতো প্রজাপতিও ফুলের পরাগায়ন তৈরীতে সাহায্য করে। অন্যের খাদ্য হিসাবে বাস্থানের খাদ্য শৃঙ্খলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে প্রজাপতি।


তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, প্রজাপতি বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় প্রকৃতিতে জন্মানো গুল্ম জাতীয় গাছের পরাগায়ন ঘটিয়ে বর্ষাকালে পাহাড়ী ঢল হতে পাহাড়কে ধ্বসের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এজন্যই প্রজাপতির সাথে গাছপালার একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে যা সৃষ্টি কর্তার এক অপরুপ মহিমা। এভাবে জানা অজানা বহু গুণাগুন রয়েছে প্রজাপতিকে নিয়ে। তাইতো প্রজাপতিকে পরিবেশের বায়ো ইন্ডিকেটর বলা হয়।প্রজাপতির জীবন নিয়ে এত অভাবনীয় গুনাবলী থাকার পরও আজ প্রকৃতির আপন খেয়াল থেকে অনেক প্রজাতির প্রজাপতি প্রায় বিলুপ্তির পথে। আর এর মুল কারণ হলো প্রজাপ্রতির বাসস্থান খাদ্য যোগানকারী নির্দিষ্ট গাছের অভাব। নির্বিচারে বন উজাড় করে বাসস্থান তৈরী, বনে মানুষের দৌরাত্ম ও ধ্বংসের আগ্রাসন, শিল্পায়ন, জনসংসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অসচেতনতা ও অপরিকল্পিতভাবে কীটনাশক ব্যবহারে প্রকৃতির আপন বন্ধু বিনাশ হচ্ছে।পৃথিবীর সব প্রাণীই খাদ্যের জন্য উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল তাই এই মানুষের জীবন প্রবাহের জন্যই এই অপরুপ সৈন্দর্যে ভারা প্রকৃতির স্বাস্থের প্রতিক প্রজাপতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাকে আপনাকে।


লেখক: প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক লেখক ও বৃক্ষ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক

 

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!