সাতছড়িতে বিলুপ্ত প্রজাতির ভালুক, এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি

হবিগঞ্জের জেলার চুনারুঘাট উপজেলার বিচিত্র ও বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রমখ্যাত সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গহীন বনে দেখা মিলেছে একটি বিরল প্রজাতির বন্য ভালুকের। সম্প্রতি হারিস দেব বর্মা নামের এক স্থানীয় ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায় এই ভালুকের ছবি ধরা পড়ে। এ নিয়ে এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সাতছড়িতে বিলুপ্ত প্রজাতির ভালুক।

ইতোমধ্যে এ ঘটনায় উদ্যানের ভেতরে জনসাধারণের অবাধ চলাফেরায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ। বনবিভাগের ধারণা, ভালুকটি এশিয়াটিক ব্ল্যাক জাতের বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির।জানা যায় এই প্রজাতিটি ভালুক মারাত্মক আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয়। ছোট বড় মিলিয়ে এরকম প্রায় ১০-১২টি ভালুক এই উদ্যানে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।  

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, এটি এশিয়াটিক ব্ল্যাক জাতের বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির একটি ভালুক। 

যা সচরাচর দেখা যায় না। এটি সংরক্ষণে আমরা আরও বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। তিনি বলেন ইতোমধ্যে পর্যটকদের উদ্যানের ভেতরে প্রবেশ করতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিষয়েও সতর্ক করছি। তবে এখন পর্যন্ত ভালুক দ্বারা কেউ আক্রান্ত হয়নি।  

তেলমাছড়া বিটের কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, এই উদ্যানে যথেষ্ট পরিমাণ মায়া হরিণ, বন বিড়াল, বন্য শুকরের চলাফেরা আমরা সচরাচর লক্ষ্য করে থাকি। কিন্তু এবার ভালুক থাকার বিষয়টি আমাদেরকে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণে আরও নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করিয়েছে।

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ রবিন মিয়া বলেন, কেউ যাতে ভালুক শিকার বা পাচার করতে না পারে এ বিষয়ে কড়া সতর্ক রাখতে হবে। বনের গহীনে অবাধ চলাফেরাতে সতর্কতাসহ বনের ভেতর বসবাসকারী ‘ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠী’ বা বন্যপ্রাণী পাচারকারীরা যাতে এই বিলুপ্ত প্রায় ভালুকগুলোকে শিকার বা নিধন করতে না পারে সে বিষয়ে সদা সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।এছাড়াও ভালুকের খাদ্য যোগানের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।  

প্রসঙ্গত, এশিয়ান কালো ভালুকের কালো পশম, একটি হালকা বাদামী মুখ এবং বুকে একটি স্বতন্ত্র সাদা বা ক্রিমি প্যাচ থাকে, যা কখনও কখনও ইংরেজি ‘ভি’ অক্ষর আকৃতির হয়।

প্রাপ্তবয়স্ক একটি ভালুকের ওজন ৬০-২০০ কেজি। গড় ওজন প্রায় ১৩৫ কেজি। এশিয়ান কালো ভালুক সর্বভুক। এছাড়া এরা পোকামাকড়, বিটল লার্ভা, অমেরুদণ্ডী প্রাণী, মৌমাছি, ঘাস, ছাল, শিকড়, কন্দ ও ফল ইত্যাদি খেয়েও বেঁচে থাকে।

একুশে সংবাদ/বিএইচ