সাত প্রবাসীর মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের চিঠি ৪৪ দিন ধরে ঘুরল নানা দপ্তর-মন্ত্রণালয়ে। ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলোজি ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর) কাজ শুরুর আগেই ওই ব্যক্তিরা ফিরেছেন দেশে। বিমানবন্দরে হয়নি তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা। কোয়ারেন্টিন তো দূরের কথা তারা এখন থাকছেন পরিবারের সঙ্গে। এ খবর দিয়েছে বেসরকারি টেলিভিশ চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট।
বাংলাদেশের সাত কর্মী সংক্রামক রোগ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত। দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে যেন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়, সে কথা ঢাকাকে আগেই জানিয়েছিল রিয়াদ দূতাবাস। সেখান থেকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে চিঠি আসে ২৭ আগস্ট। এর তিন দিন পর তা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে জানায় বোর্ড। ১১ দিনের মাথায় সে চিঠি পৌঁছায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে।
মন্ত্রণালয়ে চিঠিটি আরও ২৪ দিন তা পড়ে থাকার পর ৫ অক্টোবর যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (সিডিসি) ও আইইডিসিআরে যেতে কাটে আরও চার দিন। এ বিষয়ে যাদের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, তাদের জানতেই চলে যায় ৪৪ দিন।
তবে সৌদি ফেরত সেই সাত কর্মী এখন কোথায়? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, তাদের কেউ এক মাস, কেউ আবার দেশে ফিরেছেন ১৫ দিন আগে। বিমানবন্দরে হয়নি স্বাস্থ্য পরীক্ষা, কোয়ারেন্টিনের প্রশ্নও তাই অবান্তর। থাকছেন পরিবারের সঙ্গেই।
সেই সাত সৌদি প্রবাসীর একজনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বললে তিনি জানান, শুধু রক্তের স্যাম্পল দিয়েই তাঁরা বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে যান।
স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এখন আর কিছু শনাক্ত হবে না জানিয়ে, ওই ব্যক্তিদের খোঁজ-খবর রাখার কথা বলেছে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন। তিনি বলেন, এতদিন পর মাঙ্কিপক্সের জীবাণু পরীক্ষা করে কিছুই পাওয়া যাবে না। যেসব এলাকায় আক্রান্তরা আছেন, এখন সে এলাকাগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের বিষয়ে আলাপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে এত জন-গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ৪৪ দিন কেন মন্ত্রণালয়-দপ্তরের টেবিলে টেবিলে ঘুরল সে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে সংক্রামক ব্যাধি।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী জানান, `অনেক সময় আমাদের দেশের প্রবাসী শ্রমিকরা নানা রকম সংক্রামক ব্যাধি নিয়ে দেশে আসে। তাদের এ রোগাক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি যেন দ্রুত আমাদের দেশে জানানো যায়, সেজন্য একটা সংশ্লিষ্ট ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা প্রয়োজন।`
ছোঁয়াচে রোগ মাঙ্কিপক্স ছড়ায় হাঁচি-কাশি ও অবাধ মেলামেশার কারণে। মৃত্যুহার এক থেকে ১০ ভাগ। তবে দেশে কারও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নেই।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :