দেশে বছরের ৬ মাস ধরেই থাকছে ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ। শীত নয়, জুন-জুলাইয়ে গ্রীষ্ম-বর্ষায় এর সংক্রমণ বাড়ে ৬ গুণ। আক্রান্তের মধ্যে বেশি মারা যাচ্ছেন বয়স্করা। আইইডিসিআর বলছে, হাসপাতালে ভর্তি প্রতি একশ জনে একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে এই রোগে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে আইইডিসিআর এক সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত একটি জরিপের তথ্য তুলে ধরে। সুরক্ষা নিশ্চিতে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের প্রতি বছর মার্চ মাসের আগেই টিকা নেয়ার পরামর্শ আইইডিসিআরের।
গত ১৭ বছর ধরে দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার বার্ষিক জরিপ করে আসছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ পর্যন্ত এক লাখ ১৫ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষায় ১১ ভাগ মানুষের শরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জা পজিটিভ পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পাঁচ থেকে ২৪ বছর বয়সীরা আক্রান্ত হয়েছেন বেশি। তবে এই বয়সে মৃত্যুহার সবচেয়ে কম। অন্যদিকে, এক বছরের কম বয়সী এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সীরা মারা গেছেন বেশি।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘এই টিকাটা আবার অন্যান্য টিকার মতো একবার দিলেই যে সারাজীবন সুরক্ষা দেবে তা না। প্রতি বছরই এই টিকাটা দিতে হবে। সুতরাং আমাদের টিকাটা দিতে হবে ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে। যাতে করে আমরা সর্বোচ্চ কভারেজটা পাই।’
জরিপে দেখা যায়, ইনফ্লুয়েঞ্জায় বয়স্কদের মৃত্যুঝুঁকি তিন গুণ বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘যেই মেজারগুলো, এগুলোর জন্য অতিরিক্ত পয়সা খরচের প্রয়োজন নেই। সেগুলো যদি আমরা অভ্যাসে পরিণত করতে পারি, তাহলে এই ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে অনেকখানি রিলিফ পাব।’
দেশে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকোপ। সর্দি-কাশি, জ্বর, মাথাব্যথা, গলাব্যথাসহ নানা লক্ষণ প্রকাশ পায়। বয়স্ক ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের প্রতি বছর টিকা নেয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের। একটি টিকা ৬ থেকে ৮ মাস পর্যন্ত সুরক্ষা দেয়।
আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ইনফ্লুয়েঞ্জাকে আমরা খুব বেশি গুরুত্ব দেই না। কিন্তু এটা কিন্তু সাইলেন্ট কিলারের মতো। আমাদের দেশে শীতের সময় ইনফ্লুয়েঞ্জা অলমোস্ট নীল থাকে। থাকেই না। আমাদের সিজেন হয় আরও পরে।’
১৯১৮ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারীতে মারা যায় ৫ কোটি মানুষ। এরপর সাধারণ সর্দি-জ্বরে রুপ নেয় ইনফ্লুয়েঞ্জা। তারপরও থামেনি মৃত্যু।
একুশে সংবাদ/ই.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :