সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের না থাকার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ‘ আমি দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র তিন মাসে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা উন্নতি করেছি। হাসপাতালগুলোয় কেন ডাক্তার থাকে না– এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) এবং মন্ত্রণালয়ের সবাইকে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেককে শোকজ করা হয়েছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ১০০-শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও এ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, টুঙ্গিপাড়া ১০০-শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইতিমধ্যে ২১ জন ডাক্তার পদায়ণ করা হয়েছে। আমি খেয়াল রাখবো তারা আসেন কি না? না আসলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডাক্তার সংকট এক দিনের সমস্যা নয় এটা বহু দিনের সমস্যা। স্ট্যান্ডার্ড সেটআপের অনুমোদন হয়েছে। জনবল সংকট কাটানোর জন্য দ্রুত কাজ করা হচ্ছে। গরমের কারণে হাসপাতালগুলোতে বেড খালি রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গোপালগঞ্জ ডেন্টাল কলেজ চালু ও গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মাত্র এসেছি। এগুলো আমি দেখবো। আমি সব সময় সারপ্রাইজ ভিজিট দেই এবং সারা দেশেই দিচ্ছি। আমাদের স্বাস্থ্য খাতে ভালো কাজও হচ্ছে। শুক্রবার পঞ্চগড়ে যে হাসপাতালটি ৫ বছর বন্ধ ছিল সেটি খোলা হয়েছে এবং অপারেশনও হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এন্টিবায়োটিক এ যতগুলো সরকারি সাপ্লাই আছে, যেগুলো প্রয়োজনীয় সেগুলো সরবরাহ আছে। ভবিষ্যতে যাতে এগুলো সাধারণ মানুষ পায় সে বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে। এ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে এর ভ্যাকসিন প্ল্যান্ট হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকারভিত্তিক একটি প্রকল্প। এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। দ্রুত এ প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করা হবে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারবো, তত তাড়াতাড়ি দেশের বাইরেও রপ্তানি করতে পারবো। এটি বাংলাদেশের একটি যুগান্তকারী প্ল্যান্ট হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে দেশ জুড়ে প্রচণ্ড দাবদাহ চলছে। এ সময় বয়স্ক মানুষ ও শিশুরা ডায়রিয়া সহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই সকল সিভিল সার্জনদের নির্দেশ দেওয়া আছে, এখন সাধারণ রোগী ভর্তি না করে সিট ফাঁকা রাখার জন্য।
তিনি আরও বলেন, যার জন্ম না হলে আজকে আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হতে পারতাম না। তার সমাধি ও জন্মস্থানে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি, আমি গর্বিত। আমরা সকলে মিলে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।
এর আগে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পরে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার শান্তির কামনা করেন। পরে তিনি গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক, গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান এবং এ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেন। এ সময় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও আওয়ামীলীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :