বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইডটকো বাংলাদেশ একশনএইড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সোসাইটির সাথে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এই পার্টনারশিপের উদ্দেশ্য হচ্ছে বিনামূল্যে সৌরশক্তির যোগান দিয়ে ৫০টি ‘শিশু বিকাশ কেন্দ্র’ (শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র) এর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
একশনএইড এই যৌথ উদ্যোগের নাম দিয়েছে ‘এমপাওয়ারিং শিশু বিকাশ কেন্দ্র’ বা ‘শিশু বিকাশ কেন্দ্রের ক্ষমতায়ন’। এর মাধ্যমে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি পূরণে ৭ম লক্ষ্য: সকলের জন্য সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও আধুনিক জ্বালানি সহজলভ্য করা এবং ৪র্থ লক্ষ্য: সকলের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতে ইডটকোর এবং একশনএইড বাংলাদেশের অটল প্রতিশ্রুতিরই প্রমাণ মেলে।
উভয় প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ইডটকো বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল আইজ্যাক এবং একশনএইড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির এই স্মারকটি স্বাক্ষর করেন।
সমঝোতা স্মারকের শর্তাবলী অনুযায়ী, এর ‘টাওয়ার-টু-টাওয়ার’ কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ইডটকো এই প্রকল্পের আর্থিক অংশীদার হিসেবে কাজ করবে। এই কোম্পানিটি সোলার প্যানেল স্থাপনের অর্থায়ন করবে, এবং দেশ জুড়ে ৫০টি শিশু বিকাশ কেন্দ্রের অডিও সিস্টেম, বাতি, পাখার জন্য বিদ্যুতের যোগান দেবে।
ইডটকো বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল আইজ্যাক এই পার্টনারশিপের জন্য তার উৎসাহ ব্যক্ত করে বলেন, “একশনএইড এর সাথে আমাদের এই সমন্বয়ের ফলে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব রাখার একটি দারুণ সুযোগ পাওয়া গেল। আমাদের সমন্বিত শক্তি ও উৎসের মাধ্যমে আমরা টেকসই ব্যবসায়িক চর্চার প্রচার করতে পারি, যাতে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনার এলাকাগুলোও লাভবান হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি সঠিক ও টেকসই ইকোসিস্টেম নির্মাণ, যেখানে সকলেই সংযোগ খাতে সমান অধিকার থাকবে। সমাজের একটি টেকসই ও সংযুক্ত ভবিষ্যত গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর এবং এই সমন্বিত উদ্যোগের ফলে সেই লক্ষ্যের প্রতি আরো এগিয়ে যাওয়া হবে। আমরা আশা করি আমাদের প্রচেষ্টার ফলে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবে এবং দেশ ও সমাজের প্রতি অবদান রাখতে যোগদান করবে।”
একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির, ইডটকোর সাথে নতুন পার্টনারশিপ কে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, “গত চার দশক ধরে সামাজিক ও জলবায়ু নায্যতা এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে এডভোকেসির মাধ্যমে অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে একশনএইড বাংলাদেশ। আমাদের শিশু বিকাশ কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে আমরা প্রান্তিক শিশুদের নিয়ে কাজ করছি। শৈশবের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য বিনিয়োগের পাশাপাশি আধুনিক এবং দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে বেড়ে উঠতে তাদের সাহায্য করছি । আমরা বিশ্বাস করি সকল শিশু সমান অধিকার ও সুযোগ পাবার এবং একটি টেকসই ও নিরাপদ পরিবেশে বসবাস করার অধিকার রাখে। এই পার্টনারশিপ শিশু অধিকার নিশ্চিত এবং একটি টেকসই পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে অঙ্গীকারের একটি অনন্য উদাহরণ। তরুণ প্রজন্মকে তাদের শিক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হতেও উত্সাহ দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করবে এই পার্টনারশিপ।"
বিশ্বের ষষ্ঠ সর্ববৃহৎ টেলিযোগাযোগ টাওয়ার অবকাঠামো কোম্পানি, মালয়েশিয়া-ভিত্তিক ইডটকো গ্রুপের সাবসিডিয়ারি ইডটকো টেকসই অবকাঠামোর উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে আসছে। ব্যাম্বো টাওয়ার, হাইব্রিড সোলার-উইন্ড টাওয়ার, স্পান প্রিস্ট্রেসড কংক্রিট টাওয়ার এবং স্মার্ট পোল স্ট্রিট ফার্নিচারের মতো বিভিন্ন উদ্ভাবনী ও পরিবেশবান্ধব সল্যুশন দেবার মাধ্যমে টেকসই চর্চার প্রতি এই কোম্পানিটি অবদান রেখেছে। দেশের বেসরকারি খাতে ইডটকো একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান, এটি বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এসডিজি পূরণে একটানা প্রচেষ্টা করছে এবং টেকসই চর্চার যাত্রায় স্বচ্ছতার সাথে উন্নতির ছাপ রেখে যাচ্ছে।
একশনএইড বাংলাদেশ একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যা বিশ্বের ৭১টিরও বেশি দেশে কাজ করছে। বাংলাদেশে এটি রেজিলিয়েন্স ও ক্লাইমেট জাস্টিস, নারী অধিকার ও জেন্ডার সমতা, শিক্ষা, সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, তরুণদের ক্ষমতায়ন, মানবিক সাড়াপ্রদান এবং দুর্যোগ বিষয়ক ঝুঁকি নিরসন এর মত বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের যৌথ এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে দেশের টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা উন্নয়ন করার সাথে সাথে ইডটকো এবং একশনএইড বাংলাদেশের শিশুদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে সংকল্পবদ্ধ। এই পার্টনারশিপ উভয় প্রতিষ্ঠানের সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়নের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রকাশ ঘটায় এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত দায়িত্ব পূরণে সকলের জন্য সর্বোচ্চ মাপকাঠি নির্ধারণ করে দেয়।
একুশে সংবাদ/স.ব.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :