বিশ্বের মধ্যে প্রথম মহাকাশযান পাঠিয়েছিল তারাই, বর্তমানে ভারতকে টেক্কা দিতে গিয়ে বিপর্যয়েত মুখে রুশ মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র। মাঝে প্রায় পাঁচ দশকের অপেক্ষা। অবশেষে দীর্ঘ সময় পরে চন্দ্র অভিযানে সামিল হয়েছিল রাশিয়া, কিন্তু সফল হল না তাদের প্রচেষ্টা। শেষ মূহুর্তে বিপর্যয় নেমে আসে লুনা-২৫ মহাকাশযানটির ওপর। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চাঁদের বুকেই ধ্বংস হল মহাকাশযানটি। বিজ্ঞানীদের অনুমান, কক্ষপথ সংক্রান্ত প্রি ল্যান্ডিং সমস্যার কারণে এই `মহাজাগতিক দুর্ঘটনা`।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন গতকাল দুপুরে সম্প্রচারের সময় লুনা-২৫ ধ্বংসের কথা জানায়। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবেই এই সংবাদটি উপস্থাপনের জন্য মাত্র ২৬ সেকেন্ড সময় বরাদ্দ ছিল। রসকসমস প্রকাশ করেছে যে লুনা-২৫ মহাকাশযান চাঁদের বুকে মসৃণ অবতরণের চেষ্টা করলেও দুর্ভাগ্যজনক ভাবেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার কবলে পড়ার আগে একটি অনিয়মিত কক্ষপথে চলে যায় চন্দ্রযানটি। কিন্তু কেন এই দুর্ঘটনা? গতি বাড়িয়ে ভারতের চন্দ্রযানের আগে পৌঁছাতে গিয়েই কি বিপত্তি? এমন কথা অবশ্য অস্বীকার করছে রাশিয়া।
রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস শনিবার সকালে জানিয়েছে, গ্রিনিচ স্ট্যান্ডার্ড টাইম ১১টা ৫৭ মিনিটে লুনা-২৫ চন্দ্রযানের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কন্ট্রোলরুমের। কিন্তু, ইতিহাস বলছে অতীতে মহাকাশ অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিল রাশিয়াই। ১৯৫৭ সালে পৃথিবীর কক্ষপথে স্পুটনিক-১ নামে প্রথম মহাকাশযান পাঠিয়েছিল রাশিয়া। এরপর সোভিয়েত নভোচারী ইউরি গ্যাগারিন প্রথম মানুষ হিসেবে ১৯৬১ সালে মহাকাশে ভ্রমণ করেছিলেন।
অতীতের উজ্জ্বল ইতিহাস ফিরে পেতে উঠেপড়ে লেগেছিল রুশেরা। কিন্ত চন্দ্রপৃষ্ঠে রাশিয়ার মহাকাশযান ভেঙে পড়ার ঘটনা তাদের কাছে যথেষ্ট বেদনাদায়ক। এই চন্দ্র অভিযান ব্যর্থ হওয়ায় দুই ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশটি বড় সমস্যার মধ্যে পড়েছে। বর্তমানে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি চিন, ভারতও মহাকাশ গবেষণা ও চন্দ্র অভিযানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ঘটিয়ে চলেছে। ফলে এই পরিস্থিতি মহাকাশ গবেষণার গত শতকের পথপ্রদর্শকদের অনেকটাই ব্যাকফুটে। লুনা-২৫ মিশন ব্যর্থ হওয়ায় এখন চন্দ্র অভিযানের একমাত্র ভরসা ভারতের চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযান। কেবল চন্দ্র অভিযানের সাপেক্ষেই নয়, কূটনৈতিক সমীকরণের দিক থেকেও অনেকটাই পিছিয়ে গেল রাশিয়া, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :