সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৩- এ অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সেরা তিনজনকে পুরস্কৃত করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে রাজধানীর গুলশানে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ একাডেমিতে এ উপলক্ষে এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার; হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়া রিজিওনের বোর্ড মেম্বার লিজংশেং, এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। তারা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও সনদপত্র তুলে দেন।
সিডস ফর দ্য ফিউচারের গ্লোবাল কম্পিটিশন রাউন্ড ‘টেকফরগুড’- এ তাঁদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে শীর্ষ ৩ ‘সিডস’দের (বিজয়ী) নির্বাচন করা হয়েছে। এ বছরের প্রতিযোগিতার সেরা তিনজন বিজয়ী হলেন রুয়েটের সিএসই বিভাগের বরিশা চৌধুরী; আইইউটি’র বিটিএম বিভাগের সুবেহ তারেক (১ম রানার আপ); এবং বুয়েটের এমই বিভাগের ফারশিয়া কাওসার চৌধুরী (২য় রানার আপ)। এছাড়া বরিশা চৌধুরীকে সেরা দলনেতা হিসেবেও ঘোষণা করা হয়েছে।
বিজয়ীদের অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য পুরস্কার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন পেয়েছেন একটি হুয়াওয়ে ল্যাপটপ এবং রানার আপ দুজনকে হুয়াওয়ে ট্যাব এবং হুয়াওয়ে স্মার্ট ওয়াচ দেয়া হয়েছে। এছাড়া, শীর্ষ ১০ অংশগ্রহণকারীকে হুয়াওয়ে থেকে একটি করে সমাপনী সনদপত্র প্রদান করা হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম সহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়া রিজিওনের বোর্ড মেম্বার লিজংশেং এর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৩’ সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়। এছাড়া আগের বছরের বিজয়ীদের কাছ থেকে তাদের অভিজ্ঞতা শোনার পাশাপাশি বিশেষ অতিথি ও প্রধান অতিথি তাদের বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, “আমি বিশ্বাস করি সিডস ফর দ্য ফিউচার এর সমস্ত বিজয়ী তরুণেরা আমাদের দেশের বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। আমি হুয়াওয়ে কে ধন্যবাদ জানাতে চাই তাদের ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণদের এত বড় সুযোগ দেওয়ার জন্য। হুয়াওয়ে না থাকলে বাংলাদেশের টেলিকম অবকাঠামো বৃহদাকারে গড়ে উঠত না। আমি বিশ্বাস করি হুয়াওয়ে, সিডস ফর দ্য ফিউচার এর মাধ্যমে জ্ঞানার্জনের জন্য একটি দুর্দান্ত পরিবেশ তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে।”
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল বলেন, “আমি সত্যিকার অর্থেই বিশ্বাস করি, সিডস ফর দ্য ফিউচারে অংশ নেওয়ার পর যে শিক্ষা অংশগ্রহণকারীরা পেয়েছেন, তা তাদের ভবিষ্যত পথ চলার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে পাশাপাশি সমাজ ও দেশের প্রবৃদ্ধিতেও কাজে লাগবে। আমি সেরা ৩ জন সিডস এবং সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৩- এর সকল অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানাই। এছাড়া, তরুণদের শেখার এবং অন্যদের শিখতে অনুপ্রাণিত করার জন্য এমন একটি চমৎকার সুযোগ তৈরি করায় আমি হুয়াওয়ে এবং এই প্রোগ্রামের সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদেরও ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ সারওয়ার হোসেন বলেন, “এসটিইএম (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাথমেটিকস) ক্ষেত্রে মেধাবী তরুণদের খুঁজে বের করে এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁদের কার্যকরী আইসিটির প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি। সিডস ফর দ্য ফিউচারকে আমার অনেক অনুপ্রেরণামূলক বলে মনে হয়, এবং আমি নিশ্চিত যে আমাদের শিক্ষার্থীরা এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে। আমি হুয়াওয়েকে বাংলাদেশে ১০ম বারের মতো এই প্রোগ্রামটি পরিচালনার জন্য অভিনন্দন জানাই এবং যে শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করেছে তাঁদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সচিব মোঃ নূরুল হাফিজ বলেন, “একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণে আমাদের আরও তরুণ মেধাবীর অংশগ্রহণ প্রয়োজন যারা দেশের নেতৃত্বে এগিয়ে আসবে। সিডস ফর দ্য ফিউচারের মতো প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে আইসিটি প্রতিভা বিকাশে হুয়াওয়ের অবদান প্রশংসার যোগ্য। বাংলাদেশের এসটিইএম ও নন-এসটিইএম শিক্ষার্থীরা এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যাপকভাবে উপকৃত হচ্ছে।”
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সিডস ফর দ্য ফিউচার’ প্রোগ্রামটি উল্লেখযোগ্যভাবে আইসিটি তে আগ্রহী তরুণদের দক্ষতা বিকাশ করছে এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য দক্ষতার নানা ক্ষেত্র তৈরি করেছে। আমি আনন্দিত যে সারা বিশ্বের ১০০ টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী হুয়াওয়ে-এর এই ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ থেকে উপকৃত হয়েছে। শিক্ষাবিদ হিসেবে আমি আমাদের দেশের তরুণ প্রতিভাবানদের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্যে হুয়াওয়ে-এর প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। বিশ্বব্যাপী আইসিটি অন্যতম বৃহৎ শিল্প হিসেবে বিবেচিত এবং এই ধরনের উদ্যোগ স্মার্ট বাংলাদেশ এর পথে অগ্রসর হতে অবদান রাখবে।”
হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়া রিজিওনের বোর্ড মেম্বার লিজংশেং বলেন, “অসাধারণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সকল সিডস তাদের সৃজনশীলতা দেখিয়েছে, যা এসব তরুণ প্রতিভাগুলোকে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রোগ্রামটির সাফল্যকেই প্রতিফলিত করে। এই ভবিষ্যত নেতৃত্বরা সিডস ফর দ্য ফিউচারের চেতনার প্রকাশ ঘটায়। প্রযুক্তির মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তাদের যে আগ্রহ, তা প্রশংসার দাবিদার। একটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে পরবর্তী প্রজন্মের যারা প্রযুক্তি স্বপ্নদ্রষ্টা, তাদের ক্ষমতায়নে হুয়াওয়ে সব সময় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে।”
এর আগে চলতি বছর, বাংলাদেশের ছয়জন শিক্ষার্থী হুয়াওয়ে’র সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৩- এ অংশ নিয়ে দশ দিনের সফরে চীনে যান। এ সময় তারা প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নেন এবং হুয়াওয়ের বিশ্বমানের গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র (আরঅ্যান্ডডি সেন্টার) ও সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন। এছাড়া, ঐতিহ্যগত ও আধুনিক চীন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভের পাশাপাশি “ট্যালেন্ট সামিট ২০২৩-এও তারা অংশগ্রহণ করেন।
হুয়াওয়ের বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম হলো ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’, যা গত ১৫ বছর ধরে ডিজিটাল প্রতিভা বিকাশে কাজ করছে। বিশ্বব্যাপী ১৫,০০০ এরও বেশি শিক্ষার্থী এই উদ্যোগের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে। সিডস ফর দ্য ফিউচার প্রোগ্রামের মাধ্যমে হুয়াওয়ে বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী আইসিটি ইকোসিস্টেম তৈরি কাজ করে যাচ্ছে।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :