আগামী মার্চ থেকে নতুন হ্যান্ডসেট নিবন্ধন কার্যক্রম চালু হচ্ছে। অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন বিক্রি বন্ধে এই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে ওই মাস থেকে অবৈধ ফোন বিক্রি করতে পারবে না ব্যবসায়ীরা। বিক্রি করলেও হ্যান্ডসেটটি নেটওয়ার্কে সচল করা যাবে না।
এ জন্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে ব্যবসায়ীদের হাতে থাকা আনঅফিশিয়াল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
দেশে চোরাইপথে আসা অনিবন্ধিত হ্যান্ডসেটের বাজার নিয়ন্ত্রণ ও দেশীয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুরক্ষা দিতে ২০২১ সালের জুলাইয়ে দেশে প্রথমবারের মতো ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) প্রকল্প চালু করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। তবে কার্যক্রম শুরুর সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্পটি।
এই সুযোগে বাজার দখলে নেয় অবৈধ হ্যান্ডসেট। মডেলভেদে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা দাম কম হওয়ায় ১৪ হাজার কোটি টাকার মোবাইল বাজারের প্রায় ৪০ শতাংশই গ্রে-মার্কেটের নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি হ্যান্ডসেট উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর।
এক্ষেত্রে মোবাইল ফোন বিক্রেতারা বলেন, ক্রেতা শুরুতে এসেই প্রশ্ন করেন আনঅফিসিয়াল বা ভারতীয় ফোন আছে কি না। এতে অবশ্যই বিক্রিতে গড়ে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ প্রভাব পড়ে।
প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে হ্যান্ডসেট উৎপাদন কমিয়েছেন উৎপাদকরা। ২০২২ সালে ৩ কোটি ১৫ লাখ পিস হ্যান্ডসেট উৎপাদিত হলেও ২০২৩ সালে তা নেমে এসেছে ২ কোটি ৩৩ লাখে। এ অবস্থায় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ সুরক্ষায় এনইআইআর চালু করতে বিটিআরসিকে চিঠি দিয়েছে ১৭টি হ্যান্ডসেট উৎপাদক প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেসবাহ উদ্দিন বলেন, আমরা বাজারের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি অংশ হারিয়ে ফেলেছি। এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে। আমরা কিন্তু এই কথাগুলো প্রতিমন্ত্রীকে মৌখিক ও পরবর্তীতে চিঠির মাধ্যমে অনুরোধ করেছি।
খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, গ্রে মার্কেটের কারণে বছরে এক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিটিআরসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অবৈধ হ্যান্ডসেট বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বিটিআরসি বলছে, মার্চ থেকে চালু হবে এনইআইআর কার্যক্রম। ফেব্রুয়ারির মধ্যে ব্যবসায়ীদের কাছে থাকা অবৈধ হ্যান্ডসেট নিবন্ধন করে নিতে হবে। তবে বর্তমানে গ্রাহক ব্যবহার করছেন এমন আনঅফিসিয়াল হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে।
বিটিআরসির কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, আমরা একটি পুর্ণাঙ্গ সিস্টেম করে আগামী আড়াই মাসের মধ্যে চালু করব। যারা অবৈধ ফোন এনে কালোবাজারি করছে, তাদের আল্টিমেটাম দিয়ে দেব। তাছাড়া অনিবন্ধিত ফোন আগামী এক মাসের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে।
গ্রাহকদের সচেতন করতে এখন থেকে হ্যান্ডসেট কেনার আগে বৈধ কি না তা যাচাই করে নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বিটিআরসি।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :