পোস্ট অফিসে (ডাকঘর) সঞ্চয়ের টাকা রেখে পরে তা না পাওয়ার অনেক অভিযোগ পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, একজন নারী তার সারাজীবনের সঞ্চয়ের টাকা ডাক বিভাগে জমা দিয়ে গেলেন। সেটা জমা না করে কেউ আত্মসাৎ করে ফেললেন। পরে এসে ওই নারী আর টাকা পাচ্ছেন না। এ ধরনের অনেক অভিযোগ প্রতিনিয়ত আসছে। এটা সহ্য করা হবে না। জুলাই মাস থেকে ডাক বিভাগে শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে।
মঙ্গলবার (৪ জুন) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ডাকভবনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের ডাকঘরসমূহে চিলার চেম্বার কার্যকর ও ই-কমার্স সেবা সম্প্রসারণে বেসরকারি অংশীদারত্ব: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ শীর্ষক এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ডাক অধিদপ্তর।
সম্প্রতি রাজশাহীর তানোরে পোস্ট অফিসে জমা দেওয়া টাকা না পেয়ে পারুল বেগম নামে এক নারীর আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনাও তুলে ধরেন পলক। তিনি বলেন, সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখেও যদি একজন নাগরিক নিরাপত্তা না পান, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। এ ধরনের প্রতারণা মেনে নেওয়া হবে না। কঠোরভাবে এসব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুধু অনিয়ম-দুর্নীতি নয়, প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে ডাক বিভাগের কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনাও। পলক বলেন, ডাক বিভাগের থাকা ৪৬২টি গাড়ির মধ্যে ১৩৫টি অচল। এসব গাড়ি আগামী সাত দিনের মধ্যে মেরামত করে কাজে লাগাতে হবে। তা যদি না পারেন তাহলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট ও সারাদেশে থাকা মূল্যবান জমিও ডাক বিভাগ কাজে লাগাতে পারছে না। এতে বছরে ৭০০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ডাক বিভাগের গাড়ি, সার্ভিস পয়েন্ট ও অব্যবহৃত জমি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। জুলাই থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু করবো আমরা। তার আগে নিজেরে শুধরে নেবেন বলে আশা করি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাজার হাজার কোটির টাকার জমি ও অবকাঠামো রয়েছে। সেগুলো ফেলে রাখার তো কোনো মানে নেই। সরকারের টাকাও বিনিয়োগ করা লাগবে না। বেসরকারি খাত বিনিয়োগ করে ব্যবসা করবে। তারা আমাদের তাদের রাজস্বের একটি অংশ দেবেন।
শুধু সেবা বেসরকারীকরণ নয়, চলবে শুদ্ধি অভিযানও। আসন্ন বাজেটে ডাক বিভাগের জন্য কোনো বরাদ্দও চাইবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, কাদের জন্য বরাদ্দ চাইবো? ব্যবসার তো একটা তাগিদ থাকতে হবে। কিন্তু আপনাদের সেটা নেই। আপনাদের চিন্তা-সরকারি সংস্থার বেতন কমবেও না, বাড়বেও না। লাভের অংশও পাবেন না। এজন্য অবহেলায় সম্পদ পড়ে থাকলেও তার সঠিক ব্যবহার করেন না সরকারি কর্মকর্তারা।
একুশে সংবাদ/জা.নি/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :