বাড়িতে কিংবা অফিসে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধার জন্য অনেকে রাউটারের ওপর নির্ভরশীল। তবে মাঝেমধ্যেই ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়া কিংবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো ঝামেলায় পড়তে হয়। এসব ঝামেলা এড়াতে রাউটার অফ করে অন করা, রিস্টার্ট বা রিবুট করার পরামর্শ দেন অনেকে। তবে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত কীভাবে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক সংযোগ আরও ভালো করা যায়। চলুন জেনে নিই সংযোগ ভালো পাওয়ার কয়েকটি কৌশল।
ওয়াইফাই রাউটার সঠিক জায়গায় রাখুন-
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স নির্ভর করে রাউটারের ওপর। আর অনেকেই রাউটারের অবস্থান নিয়ে মাথা ঘামান না। তবে একটি রাউটার কোথায় রয়েছে সেটি নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত আলমারি বা বাক্সের মধ্যে রাউটার রাখা এড়িয়ে চলুন। এ জিনিসের ক্ষেত্রে যে কোনো বাধা বা বদ্ধ জায়গা ওয়াইফাইয়ের সংকেত দুর্বল করে দেয়। তবে রাউটারটি মেঝে থেকে ওপরে রাখলে নেটওয়ার্ক সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। আলমারি বা টেবিলের ওপরে রাখতে পারেন। এ ছাড়া রাউটারটি বাড়ির মাঝামাঝি জায়গায় থাকলেই ভালো। এর জন্য কিছুটা বাড়তি কেবল প্রয়োজন হলেও সেটি ‘স্মার্ট বিনিয়োগ’ হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
রাউটার আপগ্রেড করুন-
বাড়ির ওয়াইফাইয়ে আরও শক্তিশালী ও বিস্তৃত সংকেত পাওয়ার জন্য রাউটারটি আপগ্রেড করুন। যে কোনো গ্যাজেট বিক্রির দোকানেই ভালো মানের রাউটার পাবেন। কিছু রাউটারের ক্ষেত্রে আইএসপি বক্স মডেম আকারে বা ইথারনেট কেবলের সাহায্যে রাউটারের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। শুনতে কঠিন শোনালেও কাজটা সহজ। এ ছাড়া এ বিষয়ে রাউটার বা আইএসপির ওয়েবসাইটে দরকারি নির্দেশনা দেওয়া থাকে।
নেটওয়ার্ক এক্সটেন্ড করুন-
কেউ যদি দেখেন নিজের বাড়িতে সিগন্যাল ব্ল্যাকস্পট রয়েছে। অর্থাৎ এমন জায়গা রয়েছে, সেখানে সিগন্যাল যাচ্ছে না; এটি ঠিক করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে— সিগন্যাল এক্সটেনডার ব্যবহার করা। এ ডিভাসগুলো ব্যবহার করা খুবই সহজ। ওয়াইফাই-এ সংযোগ দিয়ে ডিভাইসটি পাওয়ার সকেটে লাগিয়ে দিলে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক আরও ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। তবে বেশিরভাগ সস্তা এক্সটেনডার, দ্বিতীয় নেটওয়ার্কটিকে মূল নেটওয়ার্কের গতির তুলনায় কিছুটা ধীরে কাজ করবে। ফলে ভালো এক্সটেনডার কিনুন।
এ ছাড়া আরও একটি বিকল্প হলো— স্যাটেলাইট পয়েন্টসহ একটি মেশ নেটওয়ার্ক সেটআপ করা। সাধারণ ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের মতো কাজ করলেও এটি জালের মতো গোটা বাড়িজুড়ে ছড়িয়ে থাকে এবং এক্সটেনডারগুলোকে নেটওয়ার্কের দ্রুত গতি দিতে সাহায্য করে। তবে এ পদ্ধতি কিছুটা খরুচে হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
নেটওয়ার্ক ব্যবহারের ওপর নজর রাখুন-
কেউ ওয়াইফাইয়ের গতি ঠিক করার জন্য অর্থ ব্যয় করতে না চাইলে, এর পরিবর্তে নেটওয়ার্ক ব্যবহারের বিষয়ে বাড়তি সতর্ক হন। উদাহরণ হিসেবে— কেউ যদি ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বিশাল কোনো ফাইল ডাউনলোড করে বা ৪কে রেজুলেশনে ভিডিও স্ট্রিমিং করে, তবে অন্যদের ডেটায় এর প্রভাব পড়তে পারে।
যদি বুঝতে পারেন অতি ব্যবহারের কারণেই বাধা আসছে, তবে যেভাবে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছেন সেটি বদলাতে হবে। অন্যথায় একটি উচ্চগতি ও ব্যান্ডউইথ আছে এমন প্যাকেজ কিনুন।
সুযোগ থাকলে কেবল ব্যবহার করুন-
সময়ের সঙ্গে বিভিন্ন ডিভাইস আরও বেশি ‘স্মার্ট’ ও উন্নত হওয়ায় বর্তমানে টিভি, পিসি, গেইমিং কনসোল ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে সংযোগ দিয়েই ব্যবহার করা যায়। তবে, ব্যবহারকারী চাইলেই কিছু ক্ষেত্রে ইথারনেট কেবল ব্যবহার করে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করতে পারেন। উদাহরণ হিসেবে, পিসি অথবা টিভিতে ইথারনেট পোর্ট থাকলে, তারের সাহায্যে ইন্টারনেট সংযোগ দিন।
এটি ওই নির্দিষ্ট ডিভাইসগুলোতে সরাসরি ইন্টারনেট সিগন্যল দেবে, যা খারাপ নেটওয়ার্কের ঝুঁকি কমাবে। এটি অনলাইন গেইমারদের জন্য বিশেষ দরকারি, যেখানে নির্ভেজাল নেটওয়ার্ক অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি, এটি রাউটারের ওপর থেকেও কিছুটা চাপ কমাবে যা বাড়তি পাওনা।
একুশে সংবাদ/য.র.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :