বাংলাদেশ সরকার জনপ্রিয় বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার ‘অভ্র কিবোর্ড’ তৈরির সাথে যুক্ত চার নির্মাতাকে একুশে পদকে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ (৯ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেহেদি হাসান খানের পাশাপাশি অভ্র তৈরিতে তাঁর তিন সহযোগী রিফাত নবী, তানবিন ইসলাম সিয়াম ও শাবাব মুস্তাফাকেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিখাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর একুশে পদক দেয়া হবে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় `একুশে পদক ২০২৫` এর জন্য মনোনীত ১৪ জন ব্যক্তি ও ১টি দলের নাম ঘোষণা করে, যেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অসামান্য অবদানের জন্য অভ্র’র মেহেদি হাসান খানের নামও প্রকাশ করা হয়।
তবে পরবর্তীতে মেহেদি হাসান খান এককভাবে একুশে পদক গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে অভ্র সফটওয়্যারটির চার নির্মাতাকেই একুশে পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবগত করা হয়।
২০০৩ সালে স্বাধীনতা দিবসের দিন (২৬ মার্চ) অভ্র কিবোর্ড নিয়ে আসেন মেহেদি হাসান খান। এরপর দ্রুতই জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে ইউনিকোড ও আনসি যুক্ত বিনামূল্যের এই বাংলা টাইপিং সফটওয়্যারটি। সে সময় বহুল-প্রচলিত বিজয় কিবোর্ডের তুলনায় অভ্র’র মূল সুবিধা ছিল এটি ব্যবহার করে ইন্টারনেটে বাংলা ভাষায় লেখা প্রকাশ করা যেত। কেননা এতে ইউনিকোডের সাপোর্ট ছিল।
পাশাপাশি ওপেন-সোর্স সফটওয়্যার হওয়ায় এটি বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ ছিল। অন্যদিকে বিজয় ছিল ক্লোজড-সোর্স- ফলে এটি ফ্রি’তে ব্যবহার করার সুযোগ ছিল না।
অভ্র কিবোর্ডের জনপ্রিয় হয়ে উঠার পেছনে আরেকটি বড় কারণ ছিল ইংরেজি ফোনেটিক অনুযায়ী বাংলায় টাইপ করার সুবিধা। এই সফটওয়্যারটির ‘অভ্র ফোনেটিক’ কিবোর্ড লেআউটের কল্যাণে বিশ্বজুড়ে বিপুলসংখ্যক বাংলা ভাষাভাষী মানুষ অতি সহজে ও সাবলীলভাবে বাংলায় টাইপ করা শিখে যায়। ফলে ইন্টারনেটে বাংলা ভাষায় কনটেন্টের পরিমাণ দ্রুততার সাথে বৃদ্ধি পায়। বাংলা ভাষায় ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট ও ব্লগের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও অনলাইনে বাংলার ব্যবহার বৃদ্ধিতে অভ্র’র অবদান অনস্বীকার্য।
সার্বিকভাবে অনলাইনে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও কনটেন্ট বৃদ্ধিতে মেহেদি হাসানের অভ্র সফটওয়্যারটির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতেও অভ্র কিবোর্ড ব্যবহার করে থাকে।
একুশে সংবাদ/ই.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :