ভারতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান চলছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও আরও ৭২ জন মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ৩০ জন মন্ত্রী, ৩৬ জন প্রতিমন্ত্রী ও স্বতন্ত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন পাঁচজন। তবে কাকে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হবে, তা পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
রোববার (৯ জুন) সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে শুরু হয় নতুন মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠান। তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের নেতা নরেন্দ্র মোদি। এরপর একে একে শপথ নেন মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও। শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন মতে, মোদির পরেই শপথ নেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এরপর শপথ নেন বিদায়ী মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শাহের পর শপথ নেন বিদায়ী মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। তারপরই মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা, প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হলেন তিনি।
এরপর শপথ নেন মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং ওই রাজ্যেরই বিদিশা কেন্দ্রের নির্বাচিত সাংসদ শিবরাজ সিং চৌহান। শিবরাজের পর শপথ নেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী ও রাজ্যসভার সাংসদ নির্মলা সীতারামন। নির্মলার পর শপথ নেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ এস জয়শঙ্কর।
জয়শঙ্করের পর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন হরিয়ানার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং এবার হরিয়ানার কার্নাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয় পাওয়া প্রবীণ বিজেপি নেতা মনোহরলাল খট্টর। এরপর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার ছেলে জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী। এবার কর্ণাটকের মাণ্ড্য কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন তিনি।
কুমারস্বামীর পর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ এবং বিদায়ী মন্ত্রিসভায় ক্রেতাসুরক্ষা, খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। এরপর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ এবং বিদায়ী মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
এছাড়াও মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন এনডিএর শরিক দল হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার (হাম) নেতা জিতনরাম মাঝিঁ। এরপর শপথ নেন এনডিএর শরিক দল জেডিইউ-র রাজীবরঞ্জন সিং। নীতিশের দলের এই নেতা বিহারের মুঙ্গের আসন থেকে জয়ী হয়েছেন।
এছাড়া মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সাংসদ বীরেন্দ্র কুমার, এনডিএর শরিক দল টিডিপির নেতা কে রামমোহন নায়ডু, কর্ণাটকের ধারওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ প্রহ্লাদ জোশী ও ওড়িশার সুন্দরগড়ের বিজেপি সাংসদ জুয়েল ওরাওঁ।
আরও শপথ নিয়েছেন বিদায়ী মন্ত্রিসভার গ্রামোন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী এবং বিহারের বেগুসরাই কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ গিরিরাজ সিং, বিদায়ী মন্ত্রিসভার রেলমন্ত্রী এবং বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অশ্বিনী বৈষ্ণব, মধ্যপ্রদেশের গুনা আসনে বিজেপি সাংসদ এবং বিদায়ী মন্ত্রিসভায় বেসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন মতে, এবার ২৭ জন পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় থেকে, ১০ জন তফসিলি নিম্নবর্গের হিন্দু সম্প্রদায় থেকে, পাঁচজন তফসিলি আদিবাসী সম্প্রদায়ের, পাঁচজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে এবার নরেন্দ্র মোদি হয়ে পড়েন পরনির্ভর। ফলে কিংমেকার হয়ে ওঠেন জোট সঙ্গী চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)। দল দুটি যথাক্রমে ১৬টি ও ১২টি করে আসন জিতেছে।
সুযোগ বুঝে নাইডু ও নীতিশ বিজেপির নেতাদের সঙ্গে ব্যাপক দরকষাকষিতে নামেন। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, শেষ পর্যন্ত টিডিপি চারজন ও জেডিইউ দুইজন করে মন্ত্রী পাচ্ছেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :