যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতা চলছেই। ইতিমধ্যেই দেউলিয়া হয়ে গেছে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংক। এবার পতনের ঝুঁকিতে পড়েছে ফার্স্ট রিপাবলিক নামের একটি আঞ্চলিক ব্যাংক। আর এরই জেরে তোড়জোড় শুরু করেছে শীর্ষ মার্কিন ব্যাংকগুলো।
পতনের আশঙ্কার কারণে অগ্রিম সতর্কতা হিসেবে ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জমা করেছে শীর্ষ ব্যাংকগুলো। শুক্রবার (১৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক ব্যাংক পতনের পর মার্কিন কর্তৃপক্ষ ব্যাংকিং ব্যবস্থার নিয়ে আতঙ্ক প্রশমিত করার চেষ্টার মধ্যেই এই পদক্ষেপটি সামনে এলো। এছাড়া এই খাত নিয়ে উদ্বেগ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এবং সেটিই সংকটের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
মূলত পরপর দু’টি ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিংখাতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোসহ হোয়াইট হাউস এখন অন্যান্য ব্যাংকের ওপর নজর রাখাও শুরু করেছে।
এর আগে একাধিক বার্তাসংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকসহ অন্যান্য ছোট ও আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোর ওপর এখন নজরদারির মধ্যে রেখেছে হোয়াইট হাউস। আর এর মধ্যেই পতনের শঙ্কায় ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকে শীর্ষ মার্কিন ব্যাংকগুলোর ৩০ বিলিয়ন ডলার জমা করার খবর সামনে এলো।
জানা গেছে, ব্যাংক অব আমেরিকা, সিটিগ্রুপ এবং জেপিমরগান চেজ-সহ যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি প্রাইভেট ব্যাংকের একটি কনসোর্টিয়াম ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জমা করার ঘোষণা দিয়েছে। কোনও ধরনের গ্যারান্টি ক্লজ বা বিমা ছাড়াই এই অর্থ জমা রাখবে ব্যাংকগুলো।
এছাড়া গোল্ডম্যান স্যাকস এবং মরগান স্ট্যানলিও ২.৫ বিলিয়ন ডলার করে জমা রাখবে ব্যাংকটিতে। এর পাশাপাশি স্টেট স্ট্রিট, পিএনসি ব্যাংক, ট্রুইস্ট, বিএনওয়াই-মেলন ব্যাংকগুলোও ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকে ১ বিলিয়ন ডলার করে জমা রাখবে।
গ্রুপটি এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমেরিকার বৃহত্তম ব্যাংকগুলোর এই পদক্ষেপ ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক-সহ সকল আকারের ব্যাংকগুলোতে তাদের আস্থাকেই প্রতিফলিত করে। আমরা একসঙ্গে আমাদের বৃহত্তর সিস্টেম, আর্থিক শক্তি এবং তারল্যকে সেখানেই সরবরাহ করছি, যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। ’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বাণিজ্যিক ব্যাংক সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিবি) বন্ধ হয়ে গেছে। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একদম বন্ধ হয়ে পড়ে ব্যাংকটি। এর মূল কারণ ছিল গুজব। ব্যাংক বন্ধের আগে হঠাৎ শোনা যায়, গুরুতর আর্থিক ঘাটতিতে ভুগছে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক। ঘাটতির পরিমাণ এতটাই যে, ব্যাংকের ব্যালান্স শিটের কিনারা করতেই প্রয়োজন অন্তত ২২৫ কোটি ডলার। এ গুজব ছড়িয়ে পড়তেই সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের গ্রাহকদের মধ্যে টাকা তোলার হিড়িক পড়ে যায়। এর জেরে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দেউলিয়া হয়ে পরে এই ব্যাংক।
একুশে সংবাদ.কম/ন.ট.প্র/জাহাঙ্গীর
আপনার মতামত লিখুন :