AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

হিজাব নীতিতে আরো কঠোর হচ্ছে ইরান


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৩:২৫ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
হিজাব নীতিতে আরো কঠোর হচ্ছে ইরান

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ছিল ইরানের মাহসা আমিনির মৃত্যুর এক বছর। গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিক পুলিশের হেফাজতে মারা যান আমিনি। তার মৃত্যুর পরই ইরান জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির আরও একটি নাম রয়েছে। তা হলো জিনা। গত বছর ইরানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য কুর্দিস্তান থেকে পরিবারের সঙ্গে রাজধানী তেহেরানে ঘুরতে আসেন মাহসা আমিনি।  পরিবারের সঙ্গে যখন তিনি তেহেরানের মেট্রো স্টেশনে আসেন তখন তাকে নৈতিক পুলিশ গ্রেপ্তার করে। হিজাব আইন ভঙ্গ করার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাকে গ্রেপ্তার করে ভ্যানে উঠিয়ে একটি তথাকথিত শিক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে পোশাক সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করা হয়। এরপর ইরানের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখানো হয়, শিক্ষা কেন্দ্রে থাকা কালীন সময়ে কীভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন মাহসা আমিনি। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার পর ইরানিয়ান কর্তৃপক্ষ জানায়, মাহসা আমিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। কিন্তু এর প্রতিবাদ জানায় তার বাবা মা। তারা বলেন, আইন শৃঙ্খলবাহিনীর নির্যাতনেই তাদের মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।

চিকিৎসার জন্য তাকে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানেই প্রথম বিক্ষোভ মিছিল হয়। এরপর মাহসা আমিনির নিজ শহর সাকেজে বিক্ষোভ করেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তা দেশটির অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এ বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভে অনেকে প্রাণ হারায়। বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে বিক্ষোভে প্রায় ৫০০ জন প্রাণ হারান। যাদের মধ্যে ৭০ জন শিশু রয়েছে।

পরে ডিসেম্বরে সরকারের তরফ থেকে বিক্ষোভে কতজন নিহত হয়েছে তার সংখ্যা প্রকাশ করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল জানায়, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যসহ ২০০ জনের বেশি ওই বিক্ষোভে প্রাণ হারায়। যারা মারা গেছে তাদের মধ্যে অনেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল এবং অনেকে বিদেশিদের দ্বারা মদদ পুষ্ট ছিল।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সুপ্রিম নেতা আলী হোসেইনি খামেনি তাদের ক্ষমা করে দিয়ে মুক্তি দেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে ফাঁসি দিয়েছে ইরান।

হিজাব ইস্যু নিয়ে ইরানের ভেতর ও বাহিরে ব্যাপক সমালোচনা হয়। নারীদের স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত। ইরানের অনেক নারী তাদের পোশাকে পরিবর্তন এনেছেন। কেউ কেউ হিজাব পড়া ছেড়ে দিয়েছে।

তবে হিজাব পরিধান আইনে কোনো পরিবর্তন আনেনি ইরান। দেশটির কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে। যারা হিজাব পরিত্যাগ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইরান আস্তে আস্তে সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

দেশটির কর্তৃপক্ষ পাবলিক স্থানগুলোতে স্মার্ট ক্যামেরা স্থাপন করেছে। যারা আইন ভঙ্গ করছে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। এছাড়া নৈতিক পুলিশকে আবার মোতায়েন করা হয়েছে।

হিজাব আইন ভঙ্গকারী নারীদের সেবা প্রদান করায় অনেক ক্যাফে এবং রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অনেক অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে হিজাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পর তেহেরানসহ বড় শহরগুলোতে হিজাবের প্রশংসা করে বিলবোর্ড টাঙানো হয়েছে।

খুব শিগগির ইরানে হিজাবের ওপর নতুন একটি  আইন কার্যকর হবে। আইন প্রণেতারা বলছেন, নতুন আইন কার্যকর হলে যারা এটি ভঙ্গ করবেন তাদের শাস্তি প্রদান করা হবে।

বিক্ষোভে ইন্ধন দিয়েছেন এমন সন্দেহে দেশটির শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়েল কয়েকজন অধ্যাপককে বহিস্কারও করা হয়েছে। ইরানের এখনও কিছু জায়গায় ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি চালু করা হয়নি। কারণ মাহসা আমিনির মৃত্যুর এক বছর পূর্তিতে আবারও বিক্ষোভ হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

বন্ধ রাখা হয়েছে সোস্যাল মিডিয়া ও ম্যাসেজিং প্লাটফর্ম। অনেক ইরানিয়ান ভিপিএন ব্যবহার করছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ভিপিএন’র ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছেন।

Iran one year after the Mahsa Amini protests

শুক্রবার ও শনিবার তেহেরানের বিভিন্ন রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য শহরেও নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রী ইসমাঈল খাতি চলতি সপ্তাহে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের মদদে অনেকে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। অনেক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এর পেছনে কাজ করেছে।

প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে দেখা করেছেন। মাহসা আমিনি যে হাসপাতালে মারা গেছেন সেখানে যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পিরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় তার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

এদিকে ব্রাসেলসে বসবাসকারী ইরানিরা শুক্রবার একটি বিক্ষোভ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে ইউরোপ, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রেও বিক্ষোভ হতে পারে।  অন্যদিকে মাহসা আমিনির মৃত্যুর এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য।

সূত্র: আল জাজিরা 

 

একুশে সংবাদ/এসআর

Link copied!