তীব্র সমালোচনার মুখে অবশেষে ক্ষমা চেয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। অ্যাডলফ হিটলারের নাৎসি বাহিনীর হয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়া এক ইউক্রেনীয় ব্যক্তিকে কানাডার পার্লামেন্টে আমন্ত্রণ জানিয়ে সম্মান জানানোয় আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইলেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, গত শুক্রবার কানাডার হাউস অব কমন্সের স্পিকার অ্যান্থনি রোটা সাবেক নাৎসি সেনাকে ‘হিরো’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। গত মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন ওই স্পিকার। তিনি বলেছেন, যা হয়েছে, তার জন্য তিনি একাই দায়ী।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হাউস অব কমন্সে দেয়া বক্তব্যে ট্রুডো বলেন, এই ঘটনায় ভয়ানক ভুল হয়ে গেছে। ওই সময় এই পার্লামেন্টে যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের সবার পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাইছি।
গত শুক্রবার কানাডার পার্লামেন্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বিশেষ অধিবেশনে হাজির হয়েছিলেন। অধিবেশনে আমন্ত্রিত হন ৯৮ বছর বয়সী ইউক্রেনীয় নাগরিক ইয়ারোস্লাভ হানকা। তাকে বীর হিসেবে প্রশংসা করেন স্পিকার রোটা। উঠে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনাও জানানো হয় তাকে।
তবে এই ঘটনা নিন্দার ঝড় তোলে বিশ্বব্যাপী। কারণ হিটলারের নাৎসি বাহিনীর হয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ করেছিলেন ওই আমন্ত্রিত অতিথি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি বাহিনীর ১৪ ওয়াফেন-এসএস গ্রেনাডিয়ার ডিভিশনে কাজ করেছিলেন হানকা। এটি ছিল নাৎসি বাহিনীর অধীন একটি স্বেচ্ছাসেবী ইউনিট। ইউনিটটির বেশির ভাগ সদস্য ছিলেন ইউক্রেনীয়রা। নাৎসী বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করা এমন ব্যক্তিকে বীর বলায় স্পিকার ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
পরে রোটা দাবি করেন, তিনি হানকার নাৎসি সংশ্লিষ্টতার কথা জানতেন না। তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভুল করেছেন তিনি। এজন্য ক্ষমাও চান রোটা। তবে স্পিকারের ক্ষমা চাওয়ার পরও থামছিল না সমালোচনা। এক পর্যায়ে চাপের মুখে দলীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন স্পিকার অ্যান্থনি রোটা। পার্লামেন্টে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য দেয়ার সময় আবারও ক্ষমা চান তিনি।
এই ঘটনার পর রাশিয়া জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের অন্যতম কারণ হলো, সেই দেশকে নাৎসিদের কবল থেকে মুক্ত করা। কিন্তু ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলো তা মানতে চায় না।
রাশিয়ার এমন জবাবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, এই সব কথা বলে রশিয়া কখনই তাদের এই আগ্রাসনকে সঠিক বলে প্রমাণ করতে পারবে না।
ট্রুডো বলেন, পার্লামেন্টে সকলের পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাইছি। গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের সামনে যা হয়েছে, তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
একুশে সংবাদ/স.ট.প/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :