স্পেনে একসঙ্গে তিন নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার সকালে ফনডা মিলাগ্রোস নাইটক্লাব থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। জানা যায়, লা ফনডাতে অগ্নিকাণ্ডের পর তা পরবর্তীতে আরও দুটি ক্লাবে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, পরিবারের সদস্যরা ওই ক্লাবে জন্মদিন উৎযাপন করার সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে এবং সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়।
সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। পুলিশ নিশ্চিত করেছে যারা মারা গেছেন তারা সবাই লা ফন্ডায় ছিলেন। এখনও ১৪ জনের হিসাব পাওয়া যায়নি। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে তারা।
এ মর্মান্তিক ঘটনায় এবার সামনে এলো মায়ের প্রতি এক তরুণীর ভালবাসা। জানা গেছে, কিছু আনন্দঘন সময় কাটাতে বন্ধুদের সঙ্গে এসেছিলেন জন্মদিনের পার্টিতে। সে অনুযায়ী উল্লাসও করছিলেন তারা। কিন্ত আকস্মিক এক দুর্ঘটনা তাঁদের সকল আনন্দকে নিমিষেই ম্লান করে দিলো। নিশ্চিত মৃত্যু জেনে তাই মোবাইলে ভয়েস নোট পাঠিয়ে শেষ মূহুর্তে মাকে ভালোবাসার কথা জানালেন এক তরুণী।
জন্মদিনের পার্টিতে অংশগ্রহণকারীদের একজন তার চাচাতো ভাই এবং খালার সঙ্গে ক্লাবে এসেছিলেন। স্পেনের লা ভারদাদ দে মরসিয়া নামক পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে দুজন অগ্নিকাণ্ডের সময় বাড়িতে চলে এসেছিলেন। কিন্তু তাদের একজন সেখান থেকে ফেরেননি। সে বেঁচে আছে কি না সেটিও নিশ্চিত নন তাঁরা।
এদিকে এখনও পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি। তবে মুরসিয়ার মেয়র হোসে বালেস্তা দিনের শুরুতে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ক্লাবের প্রথম তলায় আগুন লেগেছিল। ন্যাশনাল পুলিশের কর্মকর্তা ডিয়েগো সেরাল বলেছেন, লা ফোন্ডার ছাদ ধসে পড়েছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের শনাক্ত করা ও খুঁজে বের করা কঠিন হচ্ছে ।
স্থানীয় পত্রিকার বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, আগুন লাগার সময় ২৮ বছর বয়সী এক তরুণী তার মাকে ভয়েস নোট পাঠান। সেখানে তিনি বলেন, ‘মা, আমি তোমাকে ভালোবাসি, আমরা মারা যাচ্ছি।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই তরুণী তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে নিকটবর্তী শহর কারাভাকা দে লা ক্রুজ থেকে ক্লাবে গিয়েছিলেন। তারা এখনও বেঁচে গেছেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। ওই তরুণীর বাবা জাইরো জানান, তাঁর মেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্লাবে গিয়েছিলেন। কারণ কারাভাকাতে কোনো নাইটক্লাব নেই।
এদিকে প্রচণ্ট ধোঁয়ার ফলে শ্বাসকষ্টে চারজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আহত অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। স্থানীয় মেয়র জস ব্যালেস্তা তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন। ফায়ার সার্ভিসের ৪০ জনের বেশি সদস্য ও ১২টি জরুরি সেবাদানকারী যান উদ্ধারকাজে অংশ নেয়।
উল্লেখ্য, নাইটক্লাবের এই অগ্নিকাণ্ড দেশটিতে ৩০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে ১৯৯০ সালে জারাগোজার একটি ভেন্যুতে অগ্নিকাণ্ডে ৪৩ জন নিহত হন।
এ সংক্রান্ত আরো খবর : স্পেনে তিন নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৩
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :