ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় এখন পর্যন্ত কয়েকশো সেনাসহ অন্তত ৭০০ ইসরাইলি নিহত হয়েছে। এছাড়া, আরো ৭০০`র বেশি সেনা ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিবাদী নিখোঁজ রয়েছে।
এদিকে, গাজায় অবিরাম বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। টানা তৃতীয় দিনের বিমান হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই গাজার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলেছে। এতে সেখানকার পরিস্থিতির ভয়াবহতা উঠে এসেছে।
আবু মোহাম্মদ নামের ফিলিস্তিনি বলেছেন, সোমবার ভোরে কোনও আগাম সতর্ক সংকেত ছাড়াই তাদের বাড়িতে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের বাড়ির পাশের মসজিদে বোমা আঘাত হেনেছে। আমাদের বাড়ির সব জানালা ভেঙে গেছে। এখন পর্যন্ত আমরা জানি না কে বেঁচে আছে, কে মারা গেছে। একেবারে ধ্বংসযজ্ঞ।
চারদিকে বিভিন্ন ভবন ধ্বংসের কারণে বেসামরিক প্রতিরক্ষা ক্রুরা বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় যেতে পারছেন না। অনেক জায়গায় রাস্তা বন্ধ হয়েছে।
আবু মোহাম্মদ বলেন, মাত্র আমরা নামাজ শেষ করেছিলাম এবং শিশুরা ঘুমিয়েছিল, তখনই বোমা হামলা হয়। খুব কঠিন পরিস্থিতি। সঙ্গে কিছু নিয়ে আসার মতো সময় ছিল না। আমি শুধু আমার ও ভাইয়ের মেয়েদের নিয়ে বাড়ি থেকে কোনোমতে বের হতে পেরেছি।
আমির নামের আরেক বাসিন্দা বলেছেন, রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত গাজার বেইত হানুন এলাকায় বোমাবর্ষণ হয়েছে। আমরা এখনও জানি না কারা এই বোমাবর্ষণের পর জীবিত আছেন, আর মারা গেছেন।
ইসরায়েলি বিমান হামলার কোনও সতর্ক সংকেতের ব্যবস্থা গাজায় নেই। ফলে স্থানীয়রা নিজেদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার মতো সুযোগ পান না।
আবু মোহাম্মদ বলেছেন, আমাদের মনে হয়েছে আমরা মারা যাচ্ছি। টাকা বা অন্য কিছু প্রয়োজনীয় মনে হয়নি। আমরা শুধু বেঁচে থাকতে চেয়েছিলাম। বস্তুগত কিছুর কথা আমরা ভাবিনি। আমরা চাই মানুষরা যেন জীবিত থাকেন।
এদিকে, সোমবার সকালে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯৩ জনে। এদের মধ্যে ৯১ শিশু ও ৬১ নারী রয়েছেন। এছাড়া আহতের সংখ্যা ২ হাজার ৭৫০। পশ্চিম তীরে আরও ১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর ফলে শনিবার হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া ইসরায়েলি বোমা বর্ষণে ফিলিস্তিনে নিহতের ৫০০ ছাড়িয়েছে।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :