মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীর অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে পেন্টাগন। বৃহস্পতিবারের (২৬ অক্টোবর) এই পরিকল্পিত হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে হোয়াইট হাউস ঘোষণা করে যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ‘সরাসরি বার্তা’ পাঠিয়েছেন জো বাইডেন। খবর ইরান ইন্টারন্যাশনাল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মার্কিন সামরিক বাহিনী জো বাইডেনের নির্দেশে পূর্ব সিরিয়ার দুটি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। ওই দুটি স্থাপনা তেহরান সমর্থিত গোষ্ঠী এবং ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ব্যবহার করছিল। ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটিতে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সাম্প্রতিক হামলার জেরে পেন্টাগন পাল্টা এই হামলা চালিয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এই বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীর গত ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এক মার্কিন ঠিকাদার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান এবং ২১ জন সামরিক কর্মী সামান্য আহত হন।
যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে মার্কিন স্থাপনায় হামলায় দায় অস্বীকার করার সুযোগ দেবে না। তবে যদি মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীর আক্রমণ অব্যাহত থাকে তবে আমরা আমাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করব। যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমাদের জনগণের কাছ থেকে অনুমতি নিতে দ্বিধা করব না। পেন্টাগন আরও দাবি করে ইরানের স্থাপনার মার্কিন হামলার সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনী এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের চলমান যুদ্ধের কোনো সম্পর্ক নেই।
পেন্টাগন উল্লেখ করেছে সিরিয়ায় আইআরজিসি অবস্থানে মার্কিন হামলা ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে সংঘর্ষের সাথে সম্পর্কিত নয় এবং বর্তমান যুদ্ধের প্রতি মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে না। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ সংশ্লিষ্ট দেশ এবং পক্ষকে এমন সব পদক্ষেপ এড়িয়ে যেতে বলছে যা এই অঞ্চলের চলমান সংঘাতকে উসকে দেবে বা মধ্যপ্রাচ্যের অন্য অংশে ছড়িয়ে দেবে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিমানবাহী দুটি মার্কিন রণতরী মোতায়েন করা হয়েছে এবং সেই সঙ্গে সেখানে সেনা সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে সহস্রাধিক। ১৭ অক্টোবর ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো মার্কিন সেনাদের ওপর ধারাবাহিকভাবে যেসব হামলা চালিয়েছে, তার জবাবে এসব হামলা চালানো হয়েছে। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র এর আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মার্কিন বাহিনীর ওপর চালানো হামলার যথাযথ জবাব দেবে পেন্টাগন। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর বলেছে, চলতি মাসে ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রবাহিনীর ঘাঁটি ও স্থাপনা লক্ষ্য করে কমপক্ষে ১৬ বার হামলা হয়েছে।
চলতি মাসের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘাত শুরুর পর ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞে সরাসরি সমর্থন জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এতে ফের ওয়াশিংটন-বিদ্বেষী হয়ে ওঠে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী, যাদের অনেকেই ইরান-সমর্থিত এবং ইসরায়েলের আগ্রাসন বিদ্বেষী।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :