ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এলিসি প্রাসাদে বিবিসিকে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘ইসরায়েলকে গাজায় শিশু ও নারী হত্যা বন্ধ করতে হবে। বোমা হামলার কোন যুক্তি নেই, যুদ্ধবিরতি হলে ইসরায়েলের উপকার হবে।’
বিবিসিকে দেওয়া তার এই সাক্ষাৎকার শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাতে প্রকাশিত হয়।
হামাসের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ‘স্পষ্টভাবে নিন্দা’ জানিয়ে সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ফ্রান্স - ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলির মতো ‘হামাসকে’ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে বিবেচনা করে। তবে আত্মরক্ষার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি ‘গাজায় ইসরায়েলের এই বোমা হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা’।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনসহ অন্যান্য দেশের নেতারা তার এই যুদ্ধবিরতির আহ্বানে যোগ দিক, এটা তিনি চান কিনা জানতে চাইলে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমি আশা করি তারা (আমার আহ্বানের সঙ্গে) যোগ দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল বলেছে যে তারা আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সঙ্গতি রেখে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করবে এবং বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা কমাতে পদক্ষেপ নিবে। যেমন, হামলার আগে সতর্কতা জারি করা এবং লোকজনকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো।
গাজা যুদ্ধ সম্পর্কে প্যারিসে আয়োজিত একটি মানবিক সহায়তা সম্মেলনের পরের দিন বক্তৃতা দিতে গিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, সেই শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত সমস্ত সরকার ও সংস্থার “স্পষ্ট উপসংহার” ছিল- “প্রথম মানবিক বিরতি ছাড়া অন্য কোনো সমাধান নেই। যুদ্ধবিরতি, যা
রক্ষা করার অনুমতি দেবে। বেসামরিক নাগরিকদের সন্ত্রাসীদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই।”গত ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধার ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালালে এক হাজার ৪০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এর পর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।
অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও তিন হাজারের বেশি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা শুক্রবার গাজা শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ৪ হাজার ৫০৬ জন। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ৩ হাজার ২৭ জন নারী এবং ৬৭৮ জন বৃদ্ধ রয়েছেন। ইসরায়েলি আগ্রাসনে আহত হয়েছেন আরও ২৭ হাজার ৪৯০ জন।’
তিনি বলেন, ইসরায়েলি হামলায় দেড় হাজার শিশুসহ ২ হাজার ৭০০ জন লোক এখনও বিধ্বস্ত বহু ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন বলে জানা গেছে।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :