ভারতের ক্যারালার একটি ঘটনায় বিস্মিত দেশটির আদালত। এক মাকে তার ‘ঘৃণ্য’ কাজের জন্য কঠিনতম শাস্তি দিলেন বিচারকা। বিচারক ভরা আদালতে বলে দিলেন, ইনি কোনও রকম ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য নয়। মাতৃত্বের নামে আদ্যোপান্ত লজ্জা এই নারী। তাই একে কঠিনতম শাস্তি দেওয়া হল।
গত সোমবার এই মামলায় রায় দেয় ক্যারালার একটি দ্রুত নিষ্পত্তি আদালত। সেখানেই গোটা ঘটনাটির বর্ণনা দেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আর এস বিজয় মোহন।
আদালতকে তিনি জানান, অভিযুক্ত নারী দিনের পর দিন তার মেয়েদের নিয়ে গিয়েছেন তার প্রেমিকদের কাছে। মার উপস্থিতিতেই নাবালিকা দুই কন্যাকে ধর্ষণ করেন তার দুই প্রেমিক। ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বার বার এই ঘটনা ঘটে।
আদালতকে ওই আইনজীবী জানিয়েছেন, ওই মহিলার দুই কন্যার এক জনের বয়স ১২। অন্য জন তার থেকেও বছর চারেকের ছোট। মানসিকভাবে অসুস্থ স্বামীকে ছেড়ে এই দুই মেয়েকে নিয়ে প্রেমিকের কাছে থাকতেন ওই মহিলা। প্রথম প্রেমিক শিশুপালনের হাতেই যৌন হেনস্থার শিকার হয় তার বড় মেয়ে। তার বয়স তখন সাত। ঘটনাটি সে মাকে জানালেও তিনি মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি। বরং তার অবগতিতেই দিনের পর দিন চলতে থাকে একই অত্যাচার। বাধ্য হয়েই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ওই বালিকা। বিষয়টি নিজের দিদাকে জানায় সে। তিনিই নাতনিকে শিশুদের হোমে পাঠিয়ে উদ্ধার করেন। কিন্তু এর পর অত্যাচার শুরু হয় ছোট মেয়েটির উপর।
আইনজীবী জানিয়েছেন, প্রথম প্রেমিক শিশুপালনের পর দ্বিতীয় প্রেমিকের কাছেও এই মেয়েটিকে নিয়মিত নিয়ে যেতেন মা। তাঁর উপস্থিতিতেই ধর্ষণ এবং যৌন হেনস্থা করা হত তাকে।
আইনজীবী জানিয়েছেন ঘটনাটি অজানাই থেকে যেত যদি না শিশুটি তার উপর হওয়া অত্যাচারের কথা তার দিদিকে না জানাত।
আইনজীবী জানিয়েছেন, নিয়মিত যৌন হেনস্থার কারণে শিশুটির গোপনাঙ্গে মারাত্মক জখম হয়। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই বিষয়টি দিদিকে জানায় সে। এর পরেই তাদের দিদা ঘটনাটি জানান পুলিশকে।
পুলিশ এই ঘটনায় শিশুপালন এবং ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। কিন্তু শুনানি চলাকালীন শিশুপালন আত্মহত্যা করায় মামলা চলছিল শুধুমাত্র মায়ের বিরুদ্ধেই। আদালত মোট ২২ জন সাক্ষী এবং ৩৩টি নথির বিচার করে সোমবার এই মামলায় সাজা শুনিয়েছে।
ওই নারী ‘মাতৃত্বের লজ্জা’ বলে মন্তব্য করে বিচারক। আর রেখা ওই নারীকে ৪০ বছরের কঠিন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকার জরিমানা করেছেন তিনি। সূত্র : আনন্দবাজার
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :