গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলে হামলা শুরু করেছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ইসরায়েল সীমান্তবর্তী অঞ্চলে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় অন্তত তিন লেবানিজ নিহত হয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
গাজায় ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর থেকে একাধিকবার লেবানন সীমান্তে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। দুই দেশই সীমান্ত থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিয়েছে। লেবানেন উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ কাছে। তারা বেশ কয়েকবার হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ইসরায়েলের সাথে সংঘাতে এখন পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ৭০ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। একই সময়ে লেবাননের কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকও ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, শুক্রবারের গোলাগুলিতে তাদের একজন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তারা বলেন, গাজার ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে তারা ইসরায়েলি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, লেবানন থেকে তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। দুটি রকেট প্রতিহত করা হয়েছে।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এতে ১৪০০ ইসরায়েলি নাগরিক প্রাণ হারায়। জবাবে গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিমান হামলা ও স্থল অভিযানে ১৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি। তাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। সামরিক হতাহত এড়াতে বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হচ্ছিল। হামাসের পক্ষ থেকেও প্রথম এমন আভাস মিলে মঙ্গলবার। ২২ নভেম্বর মধ্যস্থতাকারী কাতারের জানায়, বেশ কিছু শর্ত মেনে দুই পক্ষ রাজি হয়েছে। দুই দফায় বাড়া সেই যুদ্ধবিরতি শেষ হয় শুক্রবার। এরপর থেকেই গাজায় হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।
অধিকৃত পশ্চিম জেরুজালেমে বাব আস-সিসিলিয়ায় ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বাব আস-সিসিলিয়া আল-আকসা মসজিদের একটি প্রধান প্রবেশপথ। গতকাল রোববার ইসরায়েলি বাহিনী আল-আকসা ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে, মসল্লিদের মসজিদ প্রবেশে বাঁধা দিয়েছে। ৫০ বছরের নিচে কোনো ফিলিস্তিনিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ইহুদি নববর্ষ রোশ হাশানাতে ইসরায়েলি বসতিদের পথ সেখানে সুগম করে দিতে এ পদক্ষেপ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নববর্ষ উদযাপনে শত শত ইসরায়েলি সেনাদের সুরক্ষায় মরক্কো গেট দিয়ে আল-আকসা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। সেইসময় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হয়রানি ও অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে ভোরের নামাজের পরে অনেক মুসল্লি সেখানে জড়ো হয়েছিল।
ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ডব্লিউএএফএ বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী তিনজন ফিলিস্তিনি মুসল্লিতেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং পিটিয়েছে। যার মধ্যে একজন বয়স্ক নারী ও পুরুষ আছে।
এ ছাড়া আল-আকসা প্রাঙ্গণে তিনজনকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের অজ্ঞাত জায়গায় পাঠানো হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :